নাগরিকপঞ্জি ইস্যুতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে না
নাগরিকপঞ্জি ইস্যুতে আসাম রাজ্যের কারো ওপর কোনোরকম বৈষম্য করা হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং।
আজ শুক্রবার রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে এভাবেই আশ্বাস দিলেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেইসঙ্গে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এই বিষয়টিকে নিয়ে কিছু মানুষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
গুজবে যাতে কেউ কান না দেন এবং যাতে কেউ এই নাগরিকপঞ্জি নিয়ে অযথা আতঙ্কে না থাকেন সেই অনুরোধও করেন রাজনাথ।
মূলত ভারতের আসাম রাজ্যের নাগরিকপঞ্জি ইস্যুতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির কাছে থেকে ক্রমাগত চাপের ফলে পিছু হঠলো বিজেপি সরকার।
নাগরিকপঞ্জি নিয়ে রাজ্যসভার রাজনাথ বলেন, ‘আমি আবারও বলছি, এই নাগরিকপঞ্জি একটা খসড়া মাত্র। প্রত্যেকেই তাদের বক্তব্য বলার সুযোগ পাবেন। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই নাগরিকপঞ্জি করা হচ্ছে। গোটা বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে হচ্ছে। কোনো ভারতীয় নাগরিককে তাড়ানো হবে না।
এদিন রাজনাথ এই নাগরিকপঞ্জি প্রসঙ্গে কংগ্রেসের কোর্টে বল ঠেলে দিয়ে বলেন, ১৯৮৫ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর আমলে আসাম চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিলো। আসামে ১৯৫১ সালে নাগরিকপঞ্জি হয়েছিলো। আসামে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন তৎকালীন রাজীব গান্ধী সরকার। এরপর আসাম সমঝোতা কার্যকর করতে ২০০৫ সালে নাগরিকপঞ্জি আপডেট করার সিদ্ধান্ত নেন তৎকালীন কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন মনমোহন সিং সরকার। তারপর ২০১৩ সালের ৬ ডিসেম্বর নাগরিকপঞ্জি আপডেট করার জন্য নোটিফিকেশন জারি করে কেন্দ্রীয় সরকার। গোটা প্রক্রিয়াটাই হচ্ছে স্বচ্ছভাবে।
আসামে নাগরিকপঞ্জি থেকে ৪০ লাখ মানুষের নাম বাদ পড়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে ভারতের বিরোধী রাজনৈতিকদলগুলি সোচ্চার ভূমিকা নেয়। মমতা দাবি তুলেছিলেন, আসামের নাগরিকপঞ্জি তৈরির নামে কাউকে তাড়িয়ে দেওয়া যাবে না, আর কাউকেই অনুপ্রবেশকারী তকমা দেওয়া যাবে না।
এদিন রাজনাথ স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, কোনো পরিস্থিতিতেই কারো বিরুদ্ধে কড়া ব্যাবস্থা নেওয়া হবে না। তবে অযাচিত যে সব অভিযোগ উঠছে সেগুলো দুর্ভাগ্যজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।