ভারতীয় মন্ত্রীর বোনকে নিয়ে পলাতক ‘বাংলাদেশের’ সম্পদ!
ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের মন্ত্রী এস পি সিং বাঘেলার কিশোরী বোনকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক যুবকের বিরুদ্ধে। তাঁর নাম সম্পদ অধিকারী। তিনি পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসতের পৌরসভার ছয় নম্বর ওয়ার্ডের কানাপুকুর এলাকার বাসিন্দা।
অভিযোগ উঠেছে, প্রেমের সম্পর্ক গড়ে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১৫ দিন আগে উত্তরপ্রদেশ থেকে ১৬ বছরের ওই কিশোরীকে নিয়ে পালিয়েছেন সম্পদ।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ থেকে সম্পদ অধিকারী বারাসতের কানাপুকুরে এসে জমি কিনে বাড়ি করেন। কিছুদিন পর উত্তরপ্রদেশে তিনি চলে যান তাঁর বোন ও বোনের স্বামীর কাছে। সেখানে কম্পাউন্ডারের (চিকিৎসকের সহকারী) কাজ জানা সম্পদ নিজেকে চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দেন। উত্তরপ্রদেশে বোনের স্বামীর ওষুধের দোকানে চিকিৎসক হিসেবে প্র্যাকটিস করতেন তিনি। একপর্যায়ে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় এস পি বাঘেলার বোনের। উত্তরপ্রদেশের ভোটার তালিকাতে সম্পদের নাম রয়েছে।
বারাসতের কানাপুকুর এলাকার স্থানীয় কাউন্সিলর চম্পক দাস জানান, গত ১৭ মার্চ রাতে উত্তরপ্রদেশ থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী হানা দেয় অভিযুক্ত যুবকের খোঁজে কানাপুকুর এলাকায়। তিনি বলেন, ‘আমি স্থানীয় লোকজনের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, সম্পদ অধিকারীর আদি বাড়ি বাংলাদেশের নড়াইল জেলায়। সেখানে সম্পদ অধিকারীর স্ত্রী থাকেন। তিনি কয়েক বছর আগে উত্তরপ্রদেশে চলে যান। সেখানে গিয়ে নিজেকে গ্রাম ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দিয়ে জামাইবাবুর দোকানে বসতেন। সেই সূত্রেই উত্তরপ্রদেশের প্রভাবশালী সাংসদ এস পি বাঘেলার ১৬ বছরের নাবালিকা বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করেন তিনি। তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে গত ১৫ মার্চ উত্তরপ্রদেশ থেকে বিমানে করে কলকাতায় পালিয়ে আসেন। সেখান থেকে চলে আসেন বারাসতে।’
এর পরই উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কাছে ওই কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করে তার পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার পরের দিনই ওই মন্ত্রীর পরিবারের লোকজন ও উত্তরপ্রদেশ পুলিশ কিশোরীসহ সম্পদ অধিকারীর খোঁজে বারাসতে আসে। এ সময় তারা সম্পদের খোঁজে বারাসত ও বনগাঁয় তাঁর আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতেও হানা দেয়।
বারাসাতের বিধায়ক অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী জানান, প্রথমে উত্তরপ্রদেশের ওই মন্ত্রীর পক্ষ থেকে টেলিফোনে তাঁকে বিষয়টি জানানো হয়। তিনিই বারাসত থানার সঙ্গে ও স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দেন। তবে সম্পদের বাড়ির দরজায় তালা মারা ছিল। ফলে সম্পদের তথ্য পাওয়ার জন্য উত্তরপ্রদেশ পুলিশ আবারও বারাসত থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে।
এদিকে, একটি সূত্র জানিয়েছে, সম্পদ অধিকারী এবং ওই কিশোরী এলাহাবাদে এক আত্মীয়র বাড়িতে রয়েছেন। সেখানেও খোঁজ শুরু করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। পাশাপাশি, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকাতেও নজরদারি রাখা হচ্ছে। সম্পদ যেন ওই কিশোরীকে নিয়ে কোনোভাবে বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে না পারেন সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে।
এদিকে, মন্ত্রী এস পি সিং বাঘেলার ভাই নীরজ সিং বলেছেন, ‘অভিযুক্ত সম্পদের সম্পর্কে আমরা যে তথ্য জোগাড় করেছি তাতে জানতে পেরেছি বাংলাদেশের নড়াইলে সম্পদের বাবা-মা থাকেন। সেখানে ইতি নামে সম্পদের স্ত্রীও রয়েছে। নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দেওয়ার পাশাপাশি খুব বিত্তশালী ঘরের ছেলে বলেও নিজেকে পরিচয় দিতেন সম্পদ।