‘রোগীর পিটুনির’ ভয়ে দেহরক্ষী ভাড়া চিকিৎসকদের
রোগী ও তাঁদের আত্মীয়স্বজনদের রোষানল থেকে বাঁচতে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করেছেন চিকিৎসকরা। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, মুম্বাইয়ের বিভিন্ন হাসপাতালের চার হাজার চিকিৎসকের একটি সংগঠন চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত সুরক্ষায় একটি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার সাথে চুক্তি করেছে।
অ্যাসোসিয়েশন অব মেডিক্যালি কনসালন্ট্যান্টসের (এএমসি) সভাপতি সুধির নায়েকের বরাতে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, সংস্থাটির সাথে চুক্তি অনুযায়ী চার হাজার চিকিৎসকের কেউ মুম্বাই এলাকার কোথাও আক্রমণের শিকার হওয়ার সর্বোচ্চ নয় মিনিটের মধ্যে নিরাপত্তাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছাবে। চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে এই ব্যাপারে কাজ শুরু করেছে নিরাপত্তা সংস্থাটি। তবে চিকিৎসকদের সাথে চুক্তিবদ্ধ সংস্থাটির নাম জানাননি এএমসি সভাপতি সুধির।
সুধির আরো জানান, চুক্তি অনুযায়ী শুধু রোগীদের হামলাই নয়- চিকিৎসকরা কোনো বিপদে পড়লেও সাহায্য করবে এই নিরাপত্তা সংস্থা। এমনকি রাস্তায় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলেও নিরাপত্তা সংস্থাটির সাহায্য পাবেন চিকিৎসকরা। আর চিকিৎসকদের দেওয়া এই সুবিধার জন্য সংস্থাটির ৮০০ নিরাপত্তারক্ষী সার্বক্ষণিক মাঠে থাকবেন।
ভারতে চিকিৎসকদের সংগঠন ‘নেটওয়ার্ক অব ডক্টরস ফর এথিক্যাল, রেশনাল অ্যান্ড ডি-কমার্শিয়ালাইজড’-এর সভাপতি অভয় শুক্লা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্নভাবে চিকিৎসক ও রোগীদের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। বাড়ছে চিকিৎসকদের ওপর ব্যক্তিগত আক্রমণও। এর জেরে গত তিন মাসে কেবল মুম্বাইয়ে ৩০০-এর বেশি চিকিৎসক কোনো না কোনোভাবে শারীরিক আক্রমণের শিকার হয়েছেন। ২০০-এর বেশি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বিভিন্ন থানায়।
অভয় শুক্লা টাইমস অব ইন্ডিয়ার কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘কোথাও সমস্যা হচ্ছে। গত সপ্তাহেই মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে এক শিশুর মৃত্যু হলে ভাঙচুর চালায় রোগীর স্বজনরা। কিন্তু তাঁদের এটাও বুঝতে হবে ডাক্তারদের সবসময় সবকিছু করার ক্ষমতা থাকে না। চিকিৎসকদের কেউ যদি ভুল চিকিৎসা করে বা কোনো অপরাধে জড়িত থাকে তবে তার জন্য দেশে আইন রয়েছে। এভাবে আইন হাতে তুলে নেওয়াটা সমাধান হতে পারে না।’
এএমসির সাবেক সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ সদস্য ললিত কুমার বলেন, রোগীরা মনে করছেন- চিকিৎসকরা অপ্রয়োজনীয় টেস্ট করিয়ে তাঁদের কাছ থেকে বেশি টাকা আদায় করছে। আর ডাক্তারদের কথা, কেউ তাদের পরিস্থিতি বোঝে না। নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ কিন্তু কোনো সমাধান নয়, এই অবস্থায় দুই পক্ষের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতে হলে আলোচনায় বসতে হবে। দেশের গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক শক্তিকে এই অচলাবস্থা সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে।’