‘মেয়ের এত কষ্ট সহ্য করতে পারি না’
‘আমার মেয়েকে এ অবস্থায় আর দেখতে পারছি না। আমি তার কষ্ট সহ্য করতে পারছি না। কোনো চিকিৎসকই তাকে সুস্থ করতে পারছে না। তাঁরা তাকে করাচিতে জিন্নাহ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেছে। কিন্তু আমাদের তো এত অর্থ নেই।’
কথাগুলো এভাবেই বলছিলেন নয় বছরের শিশু আফসিনের মা জামিলান (৫০)। জন্মের কিছুদিন পর থেকে ১৮০ ডিগ্রি কোণে বেঁকে যায় আফসিনের মাথা। এর পর থেকে দুর্বিষহ হয়ে পড়ে শিশুটির জীবন। শুরু হয় জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ।
সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল জানায়, আফসিনের এ অবস্থার কারণে স্থানীয় লোকজন তাকে দেখে ভয় পায়। আর দশজনের সঙ্গে বসবাস করতে পারে না সে। ফলে তার পরিবারকে সমাজছাড়া হতে হয়েছে।
পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের বাসিন্দা আফসিনের পরিবারে সদস্য নয়জন। বাবা জুরিও (৫৫) কাজ করেন ক্ষেতে। মূল উপার্জন করেন শুধু তার বড় ভাই ইয়াকুব (২৫)।
নিজেদের দোকান থেকে মাস প্রতি ২০ হাজার রুপি আয় হয় তাঁর। এই অল্প অর্থেই টানতে হয় পুরো সংসারের বোঝা। সেখানে আফসিনের উন্নত চিকিৎসার চিন্তা করাও যেন স্বপ্ন দেখার মতো। তাই ছোট বোনের কষ্টের জীবন মেনে নিতে হয় তাঁকে।
আফসিনের মা জামিলান জানান, জন্মের সময় স্বাভাবিক ছিল আফসিনের স্বাস্থ্য। তার যখন আট মাস বয়স, তখন পড়ে যায় সে। এতে ঘাড়ে ব্যথা পায় সে। মাথা একদিকে বেঁকে যায়। অনেকটা গাফিলতি আর অর্থের অভাবে সে সময় আফসিনের চিকিৎসা হয়নি। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে অবনতি হতে থাকে আফসিনের স্বাস্থ্যের। পরে স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে গেলেও তাঁরা আশার কোনো আলো দেখাতে পারেননি।
জামিলান আরো জানান, অজ্ঞাত এই রোগটির কারণে আফসিন ঠিকমতো দাঁড়াতে ও বসতে পারে না। পারে না খেলাধুলা করতে ও স্কুলে যেতে। বাড়ির এক কোণে বেশিরভাগ সময় সময় চুপচাপ বসে থাকে সে। আর যন্ত্রণা বেড়ে গেলে শুরু হয় কান্নাকাটি। মেয়েকে সব সময় কোলে করে রাখতে হয়। কিন্তু বয়স বাড়লে আফসিনের অবস্থা কী হবে, তা নিয়ে বেশ চিন্তিত জামিলান।