আবদুল কালামের অজানা ১৪
ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী এ পি জে আবদুল কালাম গতকাল সোমবার পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। প্রতিরক্ষায় ভারতকে আজকের পর্যায়ে আনতে অসামান্য অবদান রেখেন আবদুল কালাম। তাঁর জন্ম তামিল নাডুর এক দরিদ্র পরিবারে। তবে ছোটকালেই তিনি মেধার পরিচয় দেন। কৃতিত্বের সঙ্গে সব পরীক্ষার সাফল্য পান। বৈমানিক হতে চেয়ে শেষ পর্যন্ত হন বিজ্ঞানী। তাঁর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ এমন অনেক তথ্য আছে যা অনেকেরই অজানা। পরিচিত ও অপরিচিত তেমনই কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলো। ইন্ডিয়া ডটকম, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসসহ ভারতীয় কয়েকটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে তথ্যগুলো নেওয়া হয়েছে।
urgentPhoto
১
আবদুল কালামের বাবা জয়নুল আবেদিন ছিলেন অশিক্ষিত নৌকা মেরামতকারী। খেয়া নৌকায়ও কাজ করেছেন তিনি। অল্প বয়সের কাজ শুরু করেন আবদুল কালাম। মাত্র আট বছর বয়সে স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি পত্রিকা বিক্রি করেছেন।
২
মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে ভর্তির জন্য প্রয়োজন ছিল এক হাজার রুপি। বোনের বালা বিক্রি করে এই অর্থ জোগাড় হয়।
৩
১৯৬০ সালে মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে পাস করার পর ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থায় (ডিআরডিও) যোগ দেন তিনি। এখানেই অনেক কাজের পাশাপাশি হেলিকপ্টারের নকশা করেন আবদুল কালাম।
৪
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় (আইএসআরও) কাজ করেছেন আবদুল কালাম। তিনি ছিলেন ভারতের প্রথম নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ যন্ত্র ‘এসএলভি-থ্রি’র প্রকল্প পরিচালক।
৫
ভারতের প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষার অংশ ছিলেন কালাম। তাঁরই নেতৃত্বে অগ্নি ও পৃথ্বি ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষার পর সামরিক শক্তিতে অনেকটাই এগিয়ে যায় ভারত।
৬
সহকর্মীদের সবসময়ই সহযোগিতা করেন আবদুল কালাম। একবারের ঘটনা, ছেলেমেয়েকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা থাকলেও কাজের চাপে তা ভুলে যান কালামের এক সহকর্মী। সন্ধ্যায় মনে পড়লে তিনি দ্রুত বাড়ি ফিরে দেখেন, আবদুল কালাম তাঁর ছেলেমেয়ে নিয়ে ঘুরতে চলে গেছেন।
৭
২০০২ সালে ভারতের সব রাজনৈতিক দলের সমর্থনে ১১তম রাষ্ট্রপতি হন আবদুল কালাম।
৮
তাঁর আত্মজীবনী ‘উইংস অব ফায়ার’ ভারতের সর্বাধিক বিক্রিত বইগুলোর একটি। ভারতজুড়ে বিশ্বের অনেক মানুষকেই উদ্বুদ্ধ করেছে তাঁর জীবনী।
৯
২০০৫ সালে ২৬ মে সুইজারল্যান্ডে কালামের আগমনের দিনটি স্মরণীয় রাখতে দেশটি ওই দিনকে ‘বিজ্ঞান দিবস’ ঘোষণা করে।
১০
১৯৮১ সালে ভারতীয় সরকারের পদ্মভূষণ পদক পান আবদুল কালাম। ১৯৯০ সালে পান পদ্মবিভূষণ, পরে ভূষিত হন ‘ভারতরত্ন’ পদকে। বিশ্বের প্রায় ৪০টি দেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানজনক ডক্টরেট ডিগ্রি পান আবদুল কালাম।
১১
আবদুল কালামের ৭৯তম জন্মদিনকে বিশ্বজুড়ে ছাত্র দিবস হিসেবে পালন করে জাতিসংঘ।
১২
২০০৩ ও ২০০৬ সালে ওই বছরের এমটিভি ইয়ুথ আইকনের জন্য মনোনয়ন পান আবদুল কালাম।
১৩
ভারতের কোনো রাষ্ট্রপতিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ২১ আসামির মধ্যে ২০ জনকে ক্ষমা করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আবদুল কালাম কোনো মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিকে ক্ষমা করেননি। এজন্য অনেকে তাঁর সমালোচনাও করেন।
১৪
ভারত সরকার দেশের প্রেসিডেন্টের দেখভাল করে। ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পরও দেখভালের দায়িত্ব নেয় সরকার। এই তথ্য জানতে পেরে নিজের সব সঞ্চয় ও আয় দান করেন ‘পিইউআরএ’ নামের নিজেরই গড়া একটি ট্রাস্টে। এর লক্ষ্য হলো প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে শহরের সুবিধা ছড়িয়ে দেওয়া।