যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গদের সমাবেশে সংঘর্ষ, নিহত ৩, জরুরি অবস্থা
যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার শার্লোটসভিল শহরে চরম ডানপন্থী শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদী আর বর্ণবাদবিরোধীদের মধ্যে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো অন্তত ৩৫ জন।
এর মধ্যে বর্ণবাদবিরোধীদের ভিড়ের মধ্যে গাড়ি ঢুকিয়ে দিলে একজন এবং সমাবেশের পাশে একটি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় আরো দুজন নিহত হয়েছেন। হেলিকপ্টারটি কীভাবে দুর্ঘটনার কবলে পড়ল, তা তদন্ত করে দেখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বার্তা সংস্থা এএফপি ও বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পরিস্থিতি সামলাতে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং রাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
গৃহযুদ্ধের সময়কার জেনারেল রবার্ট ই লি-র একটি ভাস্কর্য পার্ক থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে ডানপন্থীরা। ১৮৬১-৬৫ সালের গৃহযুদ্ধে দাসত্বপ্রথার পক্ষে লড়াইকারী কনফেডারেট বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন জেনারেল লি। চরম ডানপন্থী শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীরা কনফেডারেম পতাকা হাতে নিয়ে এবং বর্ম ও হেলমেট মিছিলে হাজির হয়েছিলেন।
একই সময়ে শহরে বর্ণবাদবিরোধী সংগঠনগুলোও আলাদা মিছিল বের করে। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। শহরে অনেক রাস্তায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বিবিসি জানিয়েছে, বিরোধী কর্মীদের একটি সমাবেশের ওপর চলন্ত গাড়ি তুলে দেওয়া হলে একজন নিহত আর বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
পরিস্থিতি সামলাতে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এসব সমাবেশের জন্য কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে এবং বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুই পক্ষই একে অপরের ওপর বোতল, পাথর ছুড়ে মারে। এমনকি তারা পিপার স্প্রেও ব্যবহার করে। যদিও শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, কিন্তু এখনো অনেক স্থানে বিছিন্নভাবে সহিংসতার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এই সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি টুইটার বার্তায় বলেছেন, ‘আমাদের সবার ঐক্যবদ্ধভাবে সব ধরনের বিদ্বেষের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো উচিত। আমেরিকায় এ রকম সহিংসতার কোনো জায়গা নেই।’
শার্লোটসভিল একটি উদারপন্থী শহর হিসেবেই পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রের গত প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে এই শহরের ৮৬ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন হিলারি ক্লিনটন। তবে এখানকার কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ জেনারেল লির ভাস্কর্য সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর শহরটি শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীদের লক্ষ্য হয়ে ওঠে।