মডেলকে অপহরণের পর ফটোশুট, পর্নো সাইটে বিক্রির চেষ্টা
যুক্তরাজ্যের এক মডেলকে অপহরণ করে পর্নো সাইটে বিক্রির চেষ্টার অভিযোগে পোল্যান্ডের এক নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
লুকাজ পাওয়েল হারবা নামে পোলিশ নাগরিক ফটোশুটের কথা বলে ক্লোয়ে আইলিং (২০) নামে ওই মডেলকে ইতালির মিলানে আমন্ত্রণ জানান। এ ছাড়া ওই ফটোশুটের জন্য পারিশ্রমিকের আগাম অর্থও পরিশোধ করেন লুকাজ হারবা।
এরপর গত সপ্তাহে ক্লোয়ে ইতালির মিলানে পৌঁছানোর পর তাকে চেতনানাশক ইনজেকশন প্রয়োগে অচেতন করে ফেলা হয়। এরপর তাঁকে একটি স্যুটকেসে ভরে নিয়ে যাওয়া হয় ইতালির উত্তরাঞ্চলের তুরিন শহরে। এখানে ওই মডেলকে কয়েকদিন বন্দি করে রাখা হয়। এ ছাড়া হাতকড়া পরিয়ে নগ্ন হয়ে যৌন উত্তেজক ফটোশুট করতে বাধ্য করা হয় বলেও অভিযোগ করেছেন ওই নারী মডেল।
এরপর লুকাজ পেজ থ্রির জনপ্রিয় মডেল ক্লোয়ে আইলিংকে পর্নো সাইটে বিক্রির জন্য দুই লাখ ৭০ হাজার পাউন্ড (দুই কোটি ৮৪ লাখ টাকা) দাম হাঁকেন।
এ সময় ইতালির এক অপরাধচক্র ‘মাফিয়া গ্যাং’-এর চোখ পড়ে এ বিজ্ঞাপনটির ওপর। ওই অপরাধচক্রের একজন কৌশলে হারবার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানায়, এক সন্তানের মা আইলিংয়ের ওপর অত্যাচার ইতালিতে চলবে না। পরে তুরিনের খামারবাড়ি থেকে আইলিংকে মুক্তি দেওয়া হয়।
পরে ওই অপরাধ চক্রের তত্ত্বাবধানেই লুকাজ হারবা মডেল আইলিংকে নিয়ে মিলানের যুক্তরাজ্য দূতাবাসে যান। সেখানে লুকাজকে গ্রেপ্তার করে স্থানীয় পুলিশ।
এরপর জিজ্ঞাসাবাদে যুক্তরাজ্যের ওয়েস্ট মিডল্যান্ডে বসবাসকারী লুকাজ জানান, ইন্টারনেটে ছবি দেখে তিনি আইলিংয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন।
মিলানের পুলিশ কর্মকর্তা লরেঞ্জো বুকোৎসি সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানান, জুলাই মাসের ১০ তারিখে ২০ বছর বয়সী ক্লোয়ে আইলিং মিলানে যান। পরদিন মিলান শহরের বাইরে ফটোগ্রাফির জায়গা দেখতে একটি গ্রামে যান ক্লোয়ে। সেখান থেকে তাঁকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অপহরণ করেন লুকাজ ও তাঁর দুই সহযোগী। এরপর চেতনানাশক দিয়ে অচেতন করা হয় তাকে। সেখান থেকে স্যুটকেসে ভরে কারের পেছনে করে তুরিন শহরের একটি খামারবাড়িতে নিয়ে যায় লুকাজ। সেখানে ক্লোয়েকে জোর করে নগ্ন ফটোশুটে বাধ্য করা হয়। এরপর তাঁকে পর্নো সাইটে বিক্রির চেষ্টা করে লুকাজ। পরে স্থানীয় একটি অপরাধচক্রের সহায়তায় পুলিশ ১৮ জুলাই লুকাজকে গ্রেপ্তার করে ক্লোয়েকে উদ্ধার করে।
এদিকে, উদ্ধার পাওয়ার পর ইতালির পুলিশের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছেন ক্লোয়ে। এক টুইটে ক্লোয়ে বলেন, ‘আমি এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে সময় পার করেছি।
অনেকবার ভেবেছিলাম আমি বোধহয় মারা যাচ্ছি। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ আমাকে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করার জন্য। ইতালির পুলিশ ও আমার ভক্তরা যাঁরা আমার জন্য দুশ্চিন্তা করেছেন তাঁদের আমি ধন্যবাদ ও ভালোবাসা জানাই।’