জার্মানির চার্চে শত শত ছাত্র যৌন হয়রানির শিকার
জার্মানির ক্যাথলিক চার্চের আওতাধীন সংগীত বিদ্যালয়ে ১৯৪৫ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক ছাত্র শারীরিক এবং যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
গত মঙ্গলবার রেজেনবুর্গ ক্যাথেড্রাল স্প্যারোস বিদ্যালয়ের ছাত্রদের ব্যাপারে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তারা বিদ্যালয়ের ‘ডমসপ্যাৎজেন গায়কদলে’ ছিল। ২০১০ সালে প্রথম এ নির্যাতনের বিষয়টি আলোচনায় আসে।
এ বিষয় তদন্তের জন্য দুই বছর আগে আইনজীবী উলরিচ ওয়েবারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁর তদন্তে বিষয়টি উঠে আসে। আইনজীবী প্রতিবেদনে ৫০০টি শারীরিক নির্যাতন এবং ৬৭টি যৌন সহিংসতার ঘটনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তদন্তে উঠে আসে মোট ৪৯ জন অপরাধী এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত।
ওয়েবার জানান, ঘটনার শিকার ৫৪৭ জন বিদ্যালয়ের ওই সময়টাকে তাঁদের জীবনের সবচেয়ে খারাপ, ভয়াবহ, সহিংসতাপূর্ণ অবস্থা ছিল বলে জানিয়েছেন। তাঁরা ওই বিদ্যালয়কে কারাগার, জাহান্নাম ও বন্দিশিবিরের সঙ্গেও তুলনা করেন।
ওয়েবার চার্চের তৎকালীন জ্যেষ্ঠ যাজকদের সমালোচনা করেন। কারণ, বাভারিয়ান শহরে সংঘটিত এসব বন্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেননি। তিনি ওই বিদ্যালয়ের সাবেক পোপ ষোড়শ বেনেডিক্টের বড় ভাই গিওর্গ রাটজিনগারেরও (৯৩) সমালোচনা করেন।
বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের শিকার অ্যালেকজান্ডার প্রোবস্ট বলেন, ‘এই চর্চা দশকের পর দশক ধরে চলে আসছে। এখানে ৫৪৭ জন শিক্ষার্থী নির্যাতন, নিপীড়ন, দুর্ব্যবহারের শিকার, এমনকি তাঁরা সামাজিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাঁরা বছরের পর বছর এ মানসিক আঘাত বয়ে বেড়াচ্ছেন। এটা আমাকে কষ্ট দেয়। দীর্ঘ সাত বছর লড়াইয়ের পর আমি এটা থেকে বের হতে পেরেছি। তারপরও এটা আজও আমাকে পীড়া দেয়।’
ওয়েবার ৬৯ বছর বয়সী কার্ডিনাল গেরহার্ড মুলারেরও সমালোচনা করেন। কারণ তিনি এ কেলেঙ্কারি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সাফাই গেয়ে যাচ্ছেন। চলতি বছরের ১ জুলাই মুলারকে ওই চার্চের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করেন পোপ ফ্রান্সিস।
ওয়েবার এটাকে ‘নীরবতার সংস্কৃতি’ বলে অ্যাখ্যা দেন।
ঘটনার শিকার ব্যক্তিরা ওই চার্চের কাছ থেকে প্রত্যেকে ২০ হাজার ইউরো ক্ষতিপূরণ প্রত্যাশা করছে।
এক বিবৃতিতে চার্চের পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়ে বলা হয়, ‘আমরা সবাই ভুল করেছি এবং এ থেকে আমরা অনেক কিছু শিখেছিও।’