দূতাবাস খোলার ঘোষণা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও কিউবা
অর্ধশতকেরও বেশি সময় পর আবার খুলতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও কিউবার মধ্যকার বন্ধ দরজা। সম্পর্ক ‘স্বাভাবিক’ করতে গত ডিসেম্বর থেকেই ধীরে ধীরে প্রতিবন্ধকতা কাটানোর নানা উদ্যোগের ঘোষণা দিচ্ছে চিরবৈরী দক্ষিণ আমেরিকার দেশ দুটি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার দুই দেশ পরস্পরের রাজধানীতে দূতাবাস খোলার ঘোষণা দিতে যাচ্ছে।
দুই দেশের কাছেই বহু প্রতীক্ষিত এ ঘোষণার বিষয়টি একজন ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা গণমাধ্যম সিএনএনকে নিশ্চিত করেছেন।
দুই দেশের রাজধানীতে দূতাবাস খোলার বিষয়ে গত ২১ মে ওয়াশিংটনে আলোচনায় বসে কিউবা ও যুক্তরাষ্ট্র। রাষ্ট্র দুটির মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নেওয়া হয় বলে জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গতকাল মঙ্গলবার ওই মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা আগামীকাল (বুধবার) আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও কিউবার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর এবং দুই দেশের রাজধানীতে দূতাবাস খোলার ঘোষণা দেব।’ তিনি জানান, ‘এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি জনসম্মুখে ভাষণ দেবেন বলে আমরা আশা করছি।’
হোয়াইট হাউস থেকে স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় বারাক ওবামা দূতাবাস খোলার তারিখ ঘোষণা দিতে পারেন বলে অনেকের ধারণা।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য থেকে মাত্র ৯০ মাইল দূরের দ্বীপরাষ্ট্র কিউবায় ফিদেল কাস্ত্রোর নেতৃত্বে বিপ্লব সংগঠিত হওয়ার পর বিগত শতকের ষাটের দশকের শুরুতে দেশটিকে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করে বিভিন্ন অবরোধ আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর পর থেকে দুই দেশের মধ্যে কোনো ধরনের সম্পর্ক ছিল না।
গত ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে শিথিলতা ও নতুন অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে ওবামার উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করে। তারই ফলশ্রতিতে দুই দেশে দূতাবাস খোলার ঘোষণা আসতে যাচ্ছে। হাভানায় আগের ভবনেই যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস পুনরায় খোলা হবে বলে হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে।
গত এপ্রিলে পানামায় এক শীর্ষ সম্মেলনের সময় ৫৫ বছরের তিক্ততা ভুলে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও কিউবার প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রো মুখোমুখি বৈঠকে অংশ নেন। এটি ছিল দীর্ঘ ৫০ বছর পর প্রথম দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ে কোনো বৈঠক।
জুনের শুরুর দিকে সন্ত্রাসের মদদকারী দেশের তালিকা থেকে কিউবার নাম আনুষ্ঠানিকভাবে বাদ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে ফেরি চলাচলও শুরু হয়েছে।