রোজা ও অম্বুবাচিতে কলকাতায় ফলের বাজার লাগামছাড়া
রমজানে মূল্যবৃদ্ধির গেরোয় হাঁসফাঁস অবস্থা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতায়। এর মধ্যে শুরু হয়েছে হিন্দুদের অন্যতম ধর্মীয় প্রথা অম্বুবাচি উৎসব। এতে অন্য সব পণ্যের তুলনায় আকাশছোঁয়া দাম বেড়েছে ফলমূলের। ইফতার ও অম্বুবাচিতে ফল জোটাতে কালঘাম ছুটছে কলকাতার বেশির ভাগ মধ্যবিত্ত পরিবারের।
সল্ট লেকের বাসিন্দা ইফতেখার আহমেদ বললেন, ‘ইফতারের থালায় ফল সাজাতে গিয়ে পকেট ফাঁকা হওয়ার জোগাড় হয়েছে।’ তিনি জানান, সাধারণত দিনভর রোজা শেষে ইফতারে ফলের সমাহার প্রচলিত। আর সেই ফলের মধ্যে অবশ্যই থাকতে হবে খেজুর। কিন্তু এবারের রমজানের বাজারে সেই খেজুরের দামই সবচেয়ে বেশি।
এক ফল বিক্রেতা অবশ্য জানালেন, রমজানের পাশাপাশি হিন্দুদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব অম্বুবাচি শুরু হওয়ায় ফলের দাম এখন আকাশছোঁয়া। কলকাতার বিভিন্ন বাজারে বেদানা এবং আপেলের দাম প্রতি কেজি ২৫০ টাকার কাছাকাছি। তার ওপর কাশ্মীরের আপেল এরই মধ্যে উধাও হয়েছে কলকাতার বিভিন্ন বাজার থেকে। বাধ্য হয়ে বিদেশি আপেল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। একইভাবে দাম বেড়েছে রোজার অন্যতম উপকরণ আমন্ড, কাজু ও পেস্তারও। খোলাবাজারে প্রায় ২২০ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে কাজু কিংবা পেস্তার প্যাকেট। একই হারে পাল্লা দিয়ে দাম বেড়েছে হিমসাগর আম, কলা ও মৌসম্বি লেবুরও।
কলকাতার অন্যতম শিয়ালদহ বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির টাস্কফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে জানান, রমজান মাস পড়তেই প্রায় প্রতিটি ফলের দামই বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা করে। মূলত রমজানের অম্বুবাচির জোড়া ফলায় ফলের বাজারে চাহিদা বেড়েছে মারাত্মক হারে। হিন্দু-মুসলিম প্রতিটি পরিবার বাজারে ঢুকেই সাত সকালে দৌড়াচ্ছে ফলের খোঁজে।
কলকাতার বাজারে শসার কেজিও এখন ৩০ টাকার কোটা ছাড়িয়েছে। দাম বেড়েছে পেঁপে, তরমুজ, আনারসেরও। খোলাবাজারে যে কোনো ফলের গায়ে হাত দেওয়াই দায়। এক পিস ভালো জাতের আনারস কিনতে গেলে পকেট থেকে খসাতে হচ্ছে কড়কড়ে ৪০ থেকে ৫০ রুপি। যে কারণে ফল কিনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে কলকাতার মধ্যবিত্ত প্রতিটি পরিবারকে। তবুও রমজানের মাসে উপায় কি! বাধ্য হয়ে বেজার মুখে হলেও ফলের দোকানের আশপাশে ঘেঁষতেই হচ্ছে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোকে। গোটা প্যাকেটের জায়গায় অন্তত দু-এক পিস করে খুচরা ফলেই আপাতত মনকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন তাঁরা।