শিনজিয়াংয়ের সামরিক বিভাগকে আরও আধুনিক করছে চীন
শিনজিয়াং মিলিটারি ডিসট্রিক্টের স্থল ইউনিট আধুনিকায়নে আরও জোর দিয়েছে চীনের সেনাবাহিনী–পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। তাদের এ কার্যক্রম নিয়ে পিএলএ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত্ব গণমাধ্যমগুলোর হাতে অজস্র প্রমাণ রয়েছে। বার্তা সংস্থা এএনআই’র বরাত দিয়ে দ্য হিন্দুস্তান টাইমস এ খবর জানিয়েছে।
শিনজিয়াং মিলিটারি ডিসট্রিক্ট মূলত ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের একটি অংশ। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির বেলফার সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের এক গবেষণায় দেখা গেছে, সেখানে প্রায় ৯০ হাজার থেকে এক লাখ ২০ হাজার স্থল সেনা রয়েছে যারা ৭৬ ও ৭৭তম আর্মি গ্রুপে বিভক্ত (অভ্যন্তরীণ শহর চংকিং ও বাওজি-তে তাদের সদর দপ্তর অবস্থিত)।
তিব্বত ও শিনজিয়াংয়ে ওয়েস্টার্ন কমান্ডের প্রত্যক্ষভাবে স্থল অভিযান পরিচালনার অনুমতি নেই বরং নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামলানোর জন্য এসব অঞ্চলের নিজস্ব সেনাবাহিনী পরিচালিত মিলিটারি ডিসট্রিক্ট রয়েছে। যেমন, শিনজিয়াং মিলিটারি ডিসট্রিক্টটের নিজেদেরই প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার সেনাসদস্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন বেইজিং ও হংকংয়ের সঙ্গে সংযুক্ত সাবেক মার্কিন সেনা ডেনিস ব্লাসকো। বেলফার সেন্টারের মতো আরও কিছু বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এই ডিসট্রিক্টে পিএলএর ৭০ হাজার স্থলসেনা রয়েছে। আর এ তথ্য সত্যি হলে তিব্বতের তুলনায় (৪০ হাজার) শিনজিয়াং মিলিটারি ডিসট্রিক্টের বেশি সেনা রয়েছে।
এ ছাড়া শিনজিয়াংয়ের সেনাবাহিনীতে আধুনিক অস্ত্রেরও জোগান দেওয়া হচ্ছে। তবে এ অঞ্চলকে ঘিরে পিএলএ কেন যুদ্ধের সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে—এমন প্রশ্ন উঠতেই পারে। এর সঙ্গে গত বছর ভারতের লাইন অব কন্ট্রোল অঞ্চলে সৃষ্ট উত্তেজনার যোগসূত্র রয়েছে বলে এএনআই’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
শিনজিয়াংয়ের অনেক আগে থেকেই নতুন অস্ত্র সরঞ্জামের ক্ষেত্রে তিব্বতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হতো। তবে, ২০২০ সালে গালওয়ান ও লেক পানগংয়ের অঞ্চলগুলোতে চীনের আঞ্চলিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পিছু না হটায় অবশেষে নজরে ফিরে শিনজিয়াং। শিনজিয়াং মিলিটারি ডিসট্রিক্টকে পুরোনো অস্ত্র ব্যবহারের পরিবর্তে পিএলএ সেখানে জরুরিভিত্তিতে আর্টিলারি, সাঁজোয়া যান ও হেলিকপ্টার পাঠিয়েছে।
কেউ হয়তো প্রশ্ন তুলতে পারে যে, এই সরঞ্জামগুলো কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিনজিয়াংকে অবদমিত করতে ব্যবহার হতে পারে। কিন্তু, গত বছর সীমান্ত সংঘর্ষের পর এই প্রক্রিয়ায় আরও গতি আসে এবং তা আরও জরুরিভিত্তিতে সম্পন্ন হয়। পাশাপাশি এটি চীনের প্রতিবেশীদের জন্য ভয়েরও ছিল যে, পিএলএ কত দ্রুত নতুন অস্ত্র তৈরি ও সরবরাহ করতে পারে।
তবে অবশ্যই ভারতের মতো কাছের প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা পরিচালনার জন্য চীনকে বেশ সতর্ক থাকতে হয়েছে। শিনজিয়াংয়ে তারা নতুন অস্ত্রগুলো একেবারে অনেক বেশি পরিমাণে আনেনি বরং অল্প অল্প করে সরবরাহ করা হয়েছে।