লন্ডন ব্রিজে মর্মান্তিক হামলায় আইএসের দায় স্বীকার
গত শুক্রবার যুক্তরাজ্যের লন্ডন ব্রিজে ছুরি নিয়ে হামলার ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠন তথাকথিত ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তারা বলছে, হামলাকারী উসমান খান (২৮) আইএসের পক্ষ থেকে ওই হামলা চালিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি তারা। গতকাল শনিবার আইএসের নিজস্ব সংবাদ সংস্থা আমাকের মাধ্যমে এই দায় স্বীকার করে তারা। সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।
আইএস দাবি করছে, যে ব্যক্তি লন্ডন ব্রিজে হামলা চালিয়েছে, সে আইএসের একজন যোদ্ধা ছিল। এ ক্ষেত্রে আইএসের বিরুদ্ধে যেসব দেশ জোট করেছে, তাদের নাগরিকদের লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়।
এদিকে লন্ডন ব্রিজে ছুরি নিয়ে হামলার ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন নারী ও একজন পুরুষ। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো কয়েকজন। এ ছাড়া ওই সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হয় ওই হামলাকারী। হামলার সময় ওই হামলাকারী ভুয়া বিস্ফোরক ডিভাইস পরা অবস্থায় ছিল।
এদিকে মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার নীল বসু জানিয়েছেন, ওই হামলাকারীর নাম উসমান খান। ২০১২ সালে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য তাঁকে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। পরে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে তাঁর গতিবিধি লক্ষ্য করা হবে এই শর্তে তাঁকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এদিকে স্টাফর্ডশায়ারের যেখানে উসমান খান থাকতেন, সেখানে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। এ ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এদিকে এ ঘটনাকে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা বলে উল্লেখ করেছে পুলিশ। হামলার পর থেকে বন্ধ রয়েছে লন্ডন ব্রিজ। সেখানে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যান চলাচল বন্ধ থাকলেও চালু রয়েছে ট্রেন সার্ভিস।
স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুরে লন্ডন ব্রিজের ওপর ‘সংঘর্ষের’ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় পুলিশ। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, এই ‘সংঘর্ষের’ সময় একজন ছুরি নিয়ে হামলা চালায়।
টুইটারে লন্ডন ব্রিজ এলাকা থেকে প্রকাশ হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, লন্ডন ব্রিজের ওপর একদল লোক ধস্তাধস্তি করছে এবং পুলিশ তাদের দিকে বন্দুক তাক করে রেখেছে। এ সময় আতঙ্কিত পথচারীদের নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে দৌড়াতে দেখা গেছে।
লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ বলছে, ছুরি নিয়ে হামলায় জড়িত মূল সন্দেহভাজন পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন। হামলাকারী ভুয়া বিস্ফোরকজাতীয় ডিভাইস পরা ছিল বলে জানায় পুলিশ।
এদিকে এ হামলা প্রতিহত করতে পারায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশংসা করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। অন্যদিকে লন্ডনের মেয়র সাদিক খানও তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের সাহসী ভূমিকার প্রশংসা করেন।