লকডাউনেই উহানে করোনার সংক্রমণ ব্যাপকভাবে কমেছে
করোনাভাইরাসের উৎসস্থল চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর একদম শুরুর পর্যায়ে লকডাউনে রাখার কারণেই দেশটির অন্যান্য অঞ্চলে ভাইরাসটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েনি। সম্প্রতি হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
চাইনিজ ইউনিভার্সিটি অব হংকংয়ের (সিইউএইচকে) তথ্যে বলা হয়, সরকার শুরুর দিকে উহান শহার লকডাউন না করলে হুবেই প্রদেশের বাইনে ৬৪ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি আক্রান্ত হতে পারত এবং হুবেই প্রদেশে ৫২ দশমিক ৬ শতাংশের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হতো। বার্তা সংস্থা ইউএনবি এ খবর জানিয়েছে।
সিইউএইচকের সহকারী অধ্যাপক ও অন্যতম গবেষক ইয়াং ইয়াং বলেন, ‘আমরা দেখতে পেয়েছি, উহান লকডাউনের কারণে শহরের বাইরে সংক্রমণের মোট ঘটনা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। এমনকি পরবর্তী সময়ে অন্য শহরগুলোতে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা প্রয়োগ কৌশলও অবদান রেখেছে।’ গবেষণার এ ফল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা অন্যান্য দেশের জন্যও প্রযোজ্য হতে পারে বলে ইয়াং গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রয়োগের মাধ্যমে একটি শহর বা এলাকাকে ব্যাপকভাবে সংক্রমিত হওয়া থেকে রক্ষা করা যেতে পারে।
করোনাভাইরাসের উৎসস্থল উহানে চলতি বছরের একদম শুরুতে যে লকডাউন ব্যবস্থা জারি করা হয়েছিল, তা আগামী ৮ এপ্রিল থেকে খুলে দিতে যাচ্ছে চীন সরকার।
ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভ্যানিয়ার হ্যামিং ফ্যাং এবং সাংহাই টেক ইউনিভার্সিটির লং ওয়াংয়ের সঙ্গে হংকং ইউনিভার্সিটির ইয়াং গবেষণাটি পরিচালনা করেন।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানার অন্যতম ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ জানুয়ারি চীনে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়। আজ বুধবার পর্যন্ত দেশটিতে ৮১ হাজার ৫৫৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে তিন হাজার ৩১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল চীনে হলেও দেশটির সরকারের নেওয়া নানা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় সেখানে ভাইরাসের সংক্রমণ তাৎপর্যপূর্ণভাবে হ্রাস পেলেও ইউরোপের ইতালি, স্পেন ও যুক্তরাষ্ট্রে তা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। বাংলাদেশেও এখন পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে এ ভাইরাসে।