রেল ট্রানজিট ব্লকের পরিণতি ভাল হবে না : লিথুয়ানিয়াকে রাশিয়া
লিথুয়ানিয়া তার ভেতর দিয়ে রেলপথে কিছু পণ্য রুশ ভূখণ্ড কালিনিনগ্রাদে পরিবহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর রাশিয়া বাল্টিক ওই দেশটিকে তার এই সিদ্ধান্তের জন্য গুরুতর পরিণতি ভোগের হুমকি দিয়েছে। মস্কো বলছে, লিথুয়ানিয়ার এই সিদ্ধান্তের জবাবে রাশিয়া এমন ব্যবস্থা নেবে যার ফলে ওই দেশের জনগণের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিবিসির প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, রাশিয়ার জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কালিনিনগ্রাদে কিছু কিছু পণ্য পরিবহণের ওপর লিথুয়ানিয়ার নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্তের পরেই রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের প্রায় চার মাসের মাথায় ইউরোপের সঙ্গে রাশিয়ার নতুন এই উত্তেজনা তৈরি হলো।
রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে কালিনিনগ্রাদের স্থলপথে কোনো সংযোগ নেই। রুশ এই ভূখণ্ড ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশ ঘিরে রেখেছে। ভূখণ্ডটি রাশিয়া ১৯৪৫ সালে দখল করে নেয় যা তাদের জন্য কৌশলগতভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ক্রেমলিন বলছে, লিথুয়ানিয়ার এই সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন ও বেআইনি। এটি শত্রুতামূলক আচরণ এবং লিথুয়ানিয়াকে অবশ্যই এই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।
তবে এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে এবং কখন সেসব ব্যবস্থা নেওয়া হবে সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একজন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সোমবার বলেছেন, ‘পরিস্থিতি আসলেই গুরুতর এবং যেকোনো ব্যবস্থা কিংবা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে গভীর বিশ্লেষণের প্রয়োজন। আগামী কয়েকদিন ধরে বিষয়টি বিশ্লেষণ করে দেখা হবে।’
তার একদিন পর আজ মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট পুতিনের একজন ঘনিষ্ঠ মিত্র নিকোলাই পাত্রুশেভ ‘রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে জাতীয় নিরাপত্তার’ বিষয়ে আলোচনার জন্য কালিনিনগ্রাদে গেছেন। রাশিয়ার ক্ষমতাধর নিরাপত্তা পরিষদের সেক্রেটারি মি. পাত্রুশেভ।
লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েলিয়াস ল্যান্ডসবার্গিস বলেছেন, ‘এখানে লিথুয়ানিয়া নিজেরা কিছু করছে না। এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) যা ১৭ জুন থেকে কার্যকর হয়েছে। ইউরোপিয়ান কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে এই কমিশনের গাইডলাইন অনুসারেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
লিথুয়ানিয়ার এই সিদ্ধান্তের পরই রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মস্কোতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মারকাস এডেরারকে তলব করে।
রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য কালিনিনগ্রাদ কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক ভূখণ্ড। রাশিয়ার বাল্টিক নৌবহরের সদর দপ্তর এই কালিনিনগ্রাদে। এর আগে মস্কো সেখানে পরমাণু অস্ত্র বহন করতে সক্ষম এরকম এক ক্ষেপণাস্ত্র ইস্কান্দর ব্যালিস্টিক মিসাইল মোতায়েন করেছিল।