বাকস্বাধীনতা তুমি কার, ম্যাক্রোঁ নাকি এরদোয়ানের?
বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন এবং ইসলাম ধর্ম নিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বিরূপ মন্তব্যের জেরে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।
এদিকে ফরাসি ম্যাগাজিন শার্লি হেবদো তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানেরও একটি ব্যঙ্গাত্মক ছবি প্রকাশ করেছে। সেখানে এরদোয়ানকে বর্ণবাদী বলে আখ্যায়িত করা হয়।
যদিও বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে মুসলিম বিশ্বে নিন্দার ঝড় উঠতে শুরু করেছে। তবে ভিন্ন পথে হাঁটছে ফরাসিরা। তারা এটিকে মিডিয়ার বাকস্বাধীনতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
এদিকে ম্যাক্রোঁকে নিয়েও আঁকা হচ্ছে বিভিন্ন ব্যঙ্গচিত্র। এর আগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়, প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে বিদ্রূপ করে কার্টুন আঁকায় মৌরিতানিয়ার বিখ্যাত কার্টুনিস্ট খালিদ মাওলা ইদরিসের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে ফ্রান্সের দূতাবাস।
তবে বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশের আগেই ওই কার্টুনিস্ট তাঁর ফেসবুকে জানিয়েছিলেন, ফরাসি দূতাবাসের সঙ্গে তাঁর কাজের চুক্তি বাতিলের যে খবর ছড়িয়েছে, তা সত্য নয়। তবে ফরাসি একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে তাঁর চুক্তি বাতিল হয়েছে। ফরাসি দূতাবাসের সঙ্গে এর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
ম্যাক্রোঁ এবং এরদোয়ানের ব্যঙ্গাত্মক ছবি নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনা পর্যালোচনা করে বিশ্লেষকরা বলেছেন, মুসলিম নেতা এরদোয়ানের ব্যঙ্গাত্মক ছবি প্রকাশ যদি গণমাধ্যমের বাকস্বাধীনতা হয়, তাহলে ফরাসি প্রেসিডেন্টের ব্যঙ্গাত্মক ছবি নিয়ে এত নিন্দা কেন?
অপর দিকে বিশ্বাসের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন না করা এবং ফ্রান্সের লাখ লাখ মুসলিমকে অবজ্ঞা করার জন্য ফরাসি প্রেসিডেন্টের তীব্র সমালোচনা করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
ম্যাক্রোঁ মৌলবাদী ইসলামের বিপরীতে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ সমুন্নত রাখা নিয়ে দৃঢ়কণ্ঠে কথা বলেন। ফ্রান্স ব্যঙ্গচিত্র দেখানো বন্ধ করবে না বলেও জানান তিনি। তাঁর এসব মন্তব্যে বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ইসলামিক ঐতিহ্যে বিশ্বনবী (সা.) ও আল্লাহর কোনো ছবি প্রদর্শন স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ। এ ধরনের কোনো কিছু মারাত্মক অপরাধ বলে গণ্য হয়।
বিশ্বাসের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন না করার জন্য ও ফ্রান্সের লাখ লাখ মুসলিমকে অবজ্ঞা করার জন্য ম্যাক্রোঁর তীব্র সমালোচনা করেন এরদোয়ান। ইসলাম নিয়ে ম্যাক্রোঁর সঙ্গে বিরোধের জেরে জনগণের প্রতি ফরাসি পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছেন এরদোয়ান।
এর আগে রোববার জর্ডান, কাতার ও কুয়েতের কিছু সুপারমার্কেটের ডিসপ্লে থেকে ফ্রান্সের তৈরি সৌন্দর্য চর্চার উপকরণসহ বিভিন্ন ফরাসি পণ্য সরিয়ে নেওয়া হয়।