বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা নিয়ে জাতিসংঘের গভীর উদ্বেগ
সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া ধর্ষণের ঘটনা এবং বাংলাদেশে নারীদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। এসব ঘটনাকে গুরুতর অপরাধ এবং মানবাধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন বলেও উল্লেখ করে সংস্থাটি। ইউনাইটেড নেশনস ইন বাংলাদেশের ফেসবুক পেজে গতকাল বুধবার দেওয়া এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নোয়াখালীতে ঘটে যাওয়া নারী সহিংসতার ঘটনা, যা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়, তা সামাজিক আচরণগত এবং কাঠামোগতভাবে বিদ্যমান নারী বিদ্বেষকে ফুটিয়ে তুলেছে। জাতিসংঘ ন্যায়বিচারের দাবিতে সাধারণ জনগণ এবং সুশীল সমাজের পাশে দাঁড়াচ্ছে। তবে আমরা মনে করি, নোয়াখালীর ঘটনাটি আবারো প্রমাণ করে যে, এটি কোনো নিছক বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং একটি পদ্ধতিগত সংস্কারের সুনির্দিষ্ট আহ্বান।’
বিবৃরতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘নারী অধিকার সুরক্ষা ও শক্তিশালীকরণে পদ্ধতিগত সংস্কারের পক্ষে আমরা আমাদের শক্ত অবস্থান তুলে ধরছি। লিঙ্গ সংবেদনশীল বিচার ব্যবস্থার প্রণয়ন ও উন্নয়ন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা পরিচালনার পদ্ধতিতে, ব্যাপক পুনর্মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সরকারকে সহায়তা করার জন্য জাতিসংঘ সর্বদা প্রস্তুত।’
জাতিংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘জাতিসংঘ (আমরা) ভুক্তভোগী ও সাক্ষীদের সমর্থন ও সুরক্ষা প্রদান এবং বিচারের ক্ষেত্রে দ্রুততা আনয়নে ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার জরুরি সংস্কারের পক্ষে। এছাড়া, নারী ও মেয়েদের সুরক্ষার জন্য অসংখ্য আইন ও কর্ম পরিকল্পনা কীভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে, সে সম্পর্কে জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা সুনিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই।’
জাতিসংঘ বলছে, ‘জাতিসংঘ তাদের সব অংশীদারদের সঙ্গে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে লিঙ্গ বৈষম্য ও পুরুষতান্ত্রিক সামাজিক নীতিগুলোকে চিহ্নিত করে নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণে কাজ করছে। আমরা এমন একটি সমাজ গঠনে কাজ করছি, যেখানে নারী ও মেয়েরা নিরাপদ বোধ করবে এবং তারা ক্রমে উন্নয়নের দিকে যাবে। এ ব্যাপারে বৈশ্বিক পরিসংখ্যানও উদ্বেগজনক। কারণ, আমরা দেখতে পাই, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা সব অপরাধের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিস্তৃত, কিন্তু সবচেয়ে কম সাজাপ্রাপ্ত। এর বিরুদ্ধে অবশ্যই রুখে দাঁড়াতে হবে।’