পায়ে দড়ি বেঁধে শিক্ষিকাকে মারধর, রাজনৈতিক নেতা বহিষ্কৃত
এক নারীকে দড়িতে বেঁধে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়াতেই অভিযুক্ত নেতার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার দলের নন্দনপুর জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ ওই ঘটনায় অভিযুক্ত দলীয় উপপ্রধান অমল সরকারকে দল থেকে বহিষ্কার করেন।
অর্পিতা বলেন, ‘এমন ঘটনা দল অনুমোদন করে না। তাই তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’ ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ এ খবর জানিয়েছে।
অমলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, জমি নিয়ে বিবাদের জেরে তিনি স্থানীয় এক নারীকে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করেছেন। সেই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই দলীয় নেতৃত্ব অমলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘটনার সূত্রপাত গত শুক্রবার দুপুরে। নন্দনপুরের বাসিন্দা স্কুলশিক্ষিকা স্মৃতিকণা দাসের জমি দখল করে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ ওঠে নন্দনপুরের স্থানীয় তৃণমূল নেতা অমল সরকারের বিরুদ্ধে। বাধা দিতে গেলে অমল তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে ওই নারীর ওপর চড়াও হন বলে অভিযোগ।
মারধরের ভিডিও ও অভিযোগকারী ওই নারীর বয়ান অনুযায়ী, অমল সরকার ও আরো কয়েকজন তৃণমূল নেতা স্থানীয় বাসিন্দাদের সামনে স্মৃতিকণা দাসের পা দড়ি দিয়ে বেঁধে রাস্তা দিয়ে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যান। তারপর রাস্তার পাশের একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ওই নারীকে বেধড়ক পেটানো হয়। সঙ্গে চলে গালিগালাজ। বাঁচাতে গেলে স্মৃতিকণা দাসের বড় বোনকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
পরে গুরুতর জখম ওই নারীকে স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর মাথায় আঘাত লেগেছে। আহত হয়েছেন তাঁর বোনও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েই গঙ্গারামপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন স্মৃতিকণা দাস। তাঁর অভিযোগ, ‘আমাকে বাঁচাতে এলে দিদিকেও ওরা মারধর করে। খুনের হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি গালিগালাজও করেছে। বাড়িতে আমি আর মা থাকি। খুবই আতঙ্কে রয়েছি।’
প্রকাশ্যে রাস্তায় এক নারীকে এভাবে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসতেই সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরপরই অভিযুক্ত অমল সরকারকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল।
এ বিষয়ে গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ কর্মকতা পুর্ণেন্দু কুণ্ডু বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।’
অভিযুক্ত অমল সরকারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার।