পাকিস্তানে ইসলাম অবমাননায় অভিযুক্তকে আদালতে ঢুকে হত্যা
পাকিস্তানের পেশোয়ারে গতকাল বুধবার ভরা আদালত কক্ষে ঢুকে ধর্মদ্রোহিতা মামলায় বিচারাধীন অভিযুক্তকে গুলি করে হত্যা করেছেন এক যুবক। খালিদ খান নামের ঘাতক যুবক কীভাবে কড়া নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেঙে আদালতে ঢুকলেন, তা পরিষ্কার হয়নি। তবে তাঁকে ঘটনার পরপরই আটক করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
পেশোয়ারের পুলিশ কর্মকর্তা আজমত খান জানিয়েছেন, ইসলাম অবমাননা মামলায় বিচারাধীন তাহির আহমেদ নাসিম নামের অভিযুক্ত নিজেকে নবী বলে ঘোষণা করায়, দুই বছর আগে ধর্মদ্রোহিতা ও ধর্ম অবমাননার অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল আদালত কক্ষে আচমকা হামলায় গুলিবিদ্ধ তাহির আহমেদকে হাসপাতালে পাঠানোর আগেই তাঁর মৃত্যু হয়।
ধর্মদ্রোহিতা পাকিস্তানে বরাবরই খুব বিতর্কিত ও জটিল একটি বিষয়। ধর্মদ্রোহিতায় দোষী সাব্যস্তকে যাবজ্জীবন কারাবাস বা মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিধান আছে। তবে, অনেক সময়ই আইন-আদালতের তোয়াক্কা না করে মারমুখী জনতাই বিচারকের ভূমিকা হাতে তুলে নিয়ে ফতোয়া দিয়ে অভিযুক্তকে মেরে ফেলে বা তাতে প্ররোচনা দেয়।
পাকিস্তানে বিচার বিভাগের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আইনি এখতিয়ার থাকলেও কেউ ধর্মদ্রোহিতায় অভিযুক্ত হলেই পরিস্থিতি অন্যরকম হয়ে যায়। ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ব্যক্তিগত প্রতিশোধ নেওয়া হয় কিংবা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভয় দেখানো হয় বলে পাকিস্তানের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর অভিযোগ।
আসিয়া বিবি নামের ধর্মদ্রোহিতায় অভিযুক্ত এক খ্রিস্টান নারীর পক্ষ নেওয়ায় ২০১১ সালে নিজের দেহরক্ষীর গুলিতে প্রাণ হারান পাঞ্জাবের গভর্নর। আসিয়ার মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল। দীর্ঘ আট বছর পর শেষ পর্যন্ত তিনি মামলা থেকে মুক্তি পান। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর কট্টরপন্থী মৌলবাদীদের ক্রমাগত প্রাণনাশের হুমকির মুখে গত বছর কানাডায় মেয়েদের কাছে চলে যান আসিয়া বিবি।