দুর্নীতিগ্রস্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে অবশ্যই মূল্য দিতে হবে : ট্রাম্প
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে ফেসবুকের দেখভালকারী পরিষদ বা ‘ওভারসাইট বোর্ড’। এমন সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘ফেসবুক, টুইটার ও গুগল যা করেছে, তা দেশের জন্য অসম্মানজনক ও বিব্রতকর। এই দুর্নীতিগ্রস্ত সামাজিক মাধ্যমগুলোকে অবশ্যই রাজনৈতিকভাবে মূল্য দিতে হবে।’ ট্রাম্প তাঁর নিজস্ব ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে গতকাল বৃহস্পতিবার এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্টের (ট্রাম্পের শাসনামলে) কাছ থেকে বাক-স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কারণ, নৈরাজ্যবাদী বামপন্থি উন্মাদেরা সত্যকে ভয় পায়। কিন্তু সত্য আগের চেয়ে বৃহৎ ও শক্তিশালী রূপে বেরিয়ে আসবে। আমাদের দেশের নাগরিকেরা তাদের পক্ষে আর দাঁড়াবে না। এই দুর্নীতিগ্রস্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে অবশ্যই রাজনৈতিকভাবে মূল্য চুকাতে হবে। এবং আমাদের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে আর ধ্বংস করার সুযোগ দেওয়া হবে না।’
এদিকে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা বহালের পরই ওভারসাইট বোর্ড জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা ফেসবুকের স্বাভাবিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থার বাইরে কি না, তা বিবেচনার বিষয়। এই স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তকে পর্যালোচনা করার জন্যেও ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া সাধারণ ব্যবহারকারীসহ সবার ক্ষেত্রেই একইভাবে এই নিয়ম ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, এ ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরার জন্যেও কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে ওভারসাইট বোর্ড।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ঘিরে মার্কিন কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে হামলার ঘটনায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
ওভারসাইট বোর্ড বলছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ করার তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তটি মানসম্পন্ন ছিল না। অন্য ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে যে নিয়ম অনুসরণ করা হয়, তাঁর ক্ষেত্রেও সে নিয়ম অনুসরণ করাই হলো সঠিক সিদ্ধান্ত। এ ব্যাপারে আগামী ছয় মাসের মধ্যে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে।
তবে নিজেদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেও ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে ওভারসাইট বোর্ড।
এরই মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজস্ব একটি ওয়েবসাইট চালু করেছেন। বলা হচ্ছে, এই ওয়েবসাইটে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ডেস্ক থেকে সরাসরি বিষয়বস্তু প্রকাশিত হবে।
এর আগে সামাজিক যোগাযোগের এসব মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার পর থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাঁর বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। এখন থেকে নতুন ওয়েবসাইটে তাঁর এসব বক্তব্য প্রকাশিত হবে।
ব্যবহারকারীরা ট্রাম্পের নতুন ওয়েবসাইটের পোস্টগুলোতে লাইক দিতে পারবেন এবং পোস্টগুলো টুইটার ও ফেসবুকে শেয়ার করতে পারবেন।
ট্রাম্পের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা জেসন মিলার এর আগে জানিয়েছিলেন, একটি নতুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চালু করা হবে। গত মার্চ মাসে মিলার বলেছিলেন, ট্রাম্পের এই নতুন সোশ্যাল মিডিয়া হবে অনেক বড় মাপের।
কিন্তু গত মঙ্গলবার মিলার এক টুইটবার্তায় বলেছেন, তিনি আগে যে ধারণা দিয়েছিলেন, নতুন এই ওয়েবসাইট সে ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম নয়।
‘এ সংক্রান্ত আরও তথ্য নিকট ভবিষ্যতে আসবে’, বলেন মিলার।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্যাম্পেইন ম্যানেজার ব্র্যাড পার্সক্যালের ডিজিটাল সার্ভিসেস কোম্পানি ট্রাম্পের নতুন এই ওয়েবসাইট তৈরি করেছে।
এদিকে ফেসবুকে জানিয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যদি ফেসবুকে ফিরে আসার অনুমতি দেওয়া হয়, তাহলে তাঁর অ্যাকাউন্ট সচল হতে সাতদিন সময় লাগবে।
অন্যদিকে ইউটিউব জানিয়েছে, বাস্তবে যখন সহিংসতার আশঙ্কা কমে আসবে, তখন ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট সচল করা হবে।