দিল্লি স্টেশনে খাবার-পানি লুট করল ক্ষুধার্ত শ্রমিকরা
ক্ষুধা, ছোট্ট এই শব্দটার মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে মানুষের বেঁচে থাকার অদম্য তাড়নার অনতিক্রম্য প্রকাশ। করোনাভাইরাস মহামারির তাণ্ডবে ভারতে রাতারাতি উপার্জনহীন, আশ্রয়হীন লাখ লাখ পরিযায়ী শ্রমিক। এই পরিস্থিতিতে ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে মানুষ কতটা ঝুঁকি নিতে পারে সেই ছবি দেখা গেল শুক্রবার পুরোনো দিল্লির এক রেল স্টেশনে। খাবার ও পানিভর্তি এক ঠেলাগাড়ি থামিয়ে তা লুট করল সেখানে উপস্থিত পরিযায়ী শ্রমিকরা। ভিডিওতে দেখা গেছে, কীভাবে তারা ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেলাগাড়ির উপর থেকে লুটে নিচ্ছে খাবার ও পানির প্যাকেট।
ওই ঠেলাগাড়িতে চার কার্টন স্ন্যাক ছিল— সম্ভবত চিপস, বিস্কুট ও অন্যান্য প্যাকেটজাত খাবার ছিল তাতে। আর ছিল পানির বোতল। ভিডিওতে দেখা গেছে ওই ঠেলাগাড়িটি প্ল্যাটফর্মে আসতেই কীভাবে মানুষ তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে। মিনিট দুয়েকের মধ্যেই সেগুলো তুলে নিয়ে শ্রমিকদের সেখান থেকে সরে যেতে দেখা যায়।
যে যতটা পেরেছে, তুলে নিয়ে নিয়ে দ্রুত এলাকা ছেড়ে চলে যায়। এমনকি, একে অপরের থেকেও প্যাকেট ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে দেখা যায় তাদের।
শুধু এই ঘটনা নয়। ক্ষুধার জ্বালায় পরিযায়ী শ্রমিকদের এমন ঝুঁকিপূর্ণ কাণ্ডের কথা আরো জানা যাচ্ছে। দেশব্যাপী লকডাউনের ধাক্কায় অসহায় হয়ে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের অভাব ও ক্ষুধা চরমে পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতিতে নিজের ও পরিবারের মুখে একমুঠো খাবার তুলে দিতে যেকোনো ঝুঁকি নিতে দেখা গেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের। রাস্তায় পড়ে থাকা দুধ খাওয়ার মতো নানা হৃদয় বিদারক দৃশ্য থেকে পরিষ্কার হয়ে যায় তাদের অসহায়তা।
এদিকে বাড়ি ফেরার পথে খাবারের অভাব, অস্বাস্থ্যকর ব্যবস্থার অভিযোগ তুলেছে পরিযায়ী শ্রমিকরা। শুক্রবার উত্তরপ্রদেশে রেল অবরোধ করে তাদের দাবি জানাতে থাকে পরিযায়ীরা। এ মাসের শুরুতে মধ্যপ্রদেশের সাতনায় খাবারের অভাবে ট্রেনের মধ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের সংঘর্ষের কথাও জানা গিয়েছিল।