দিল্লিতে সহিংসতায় ২১ জনের মৃত্যু, শান্তি চেয়ে মোদির টুইট
দিল্লিতে চলমান সহিংসতার চার দিন পর বিষয়টি নিয়ে সরব হলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আজ বুধবার টুইট করে সহিংসতা বন্ধের বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
টুইটারে মোদি লেখেন, ‘আমার ভাই ও বোনেদের দিল্লিতে শান্তি ও সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার আবেদন জানাচ্ছি। আমার দপ্তর পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। আশা করি, সবাই শান্তি বজায় রাখবেন।’
বুধবার দুপুরে করা সেই টুইটে এমন আবেদন জানান তিনি। গত রোববার থেকে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় অন্তত ২১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ভারত সরকারের পাস করানো বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিপক্ষে সংঘর্ষে গতকাল মঙ্গলবার রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল ভারতের রাজধানী দিল্লি। সেখানকার একটি হাসপাতালের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স আজ বুধবার জানিয়েছে, দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে দিল্লিতে অন্তত ২১ জনের প্রাণহানি হয়েছে। তবে নয়াদিল্লির দাঙ্গাকবলিত কয়েকটি এলাকায় আজ থমথমে নীরবতা বিরাজ করছে। এরই মধ্যে দিল্লির চারটি এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। কারফিউ চলাকালে কাউকে প্রকাশ্যে দেখা গেলে গুলি করার নির্দেশ পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
দিল্লির গুরু তেগ বাহাদুর হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, হাসপাতালে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২১ জন। এ ছাড়া হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ‘১৫ রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক’ বলেও জানান তিনি। দিল্লিতে পাথর ছুড়ে বিক্ষোভরত জনতার ওপর কাঁদানে গ্যাস ও স্মোক গ্রেনেড ব্যবহার করে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে বেশ বেগ পেতে হয়।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের মধ্যেই দিল্লিতে চরম বিক্ষোভ শুরু হয়। ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন নরেন্দ্র মোদি সরকার সিএএ পাস করানোর পর থেকেই বিতর্কিত আইনটির পক্ষে-বিপক্ষে দিল্লিতে বিক্ষোভ তুঙ্গে ওঠে। সমালোচকরা বলছেন, ভারতের অসাম্প্রদায়িক সংবিধান লঙ্ঘন করা সিএএ মুসলিমদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দিল্লি গতকাল মঙ্গলবারও ছিল অগ্নিগর্ভ। প্রকাশ্যেই চলেছে গুলি।
দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দিল্লিতে সহিংসতার ঘটনা ক্রমে ব্যাপক আকার ধারণ করছে। গতকাল মঙ্গলবার বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে পাথর ছোড়া, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত দেড়শ জন আহত হয়েছেন।
জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার সারা দিনই দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় দিল্লির ভজনপুরায়। লাঠি ও রড নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে দুই গোষ্ঠীর লোকজন। চাঁদবাগে দোকানপাট ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। পুলিশ সে সময় কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে দাবি এলাকার মানুষের। পুলিশের সংখ্যাও কম ছিল বলে দাবি করা হয়েছে।