তথ্য থাকবে না গোপন, শঙ্কায় চীনের মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা
চীনে এখন থেকে ফোন কিনলেই ‘ফেস স্ক্যান’ বাধ্যতামূলক। গত রোববার থেকে এ-সংক্রান্ত নতুন আইন চালু হয়েছে চীনজুড়ে। নতুন এ আইন নিয়ে চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব নেটিজেনরা। তাঁদের আশঙ্কা, এই আইনের ফলে বেহাত হয়ে যাবে ব্যক্তিগত তথ্য।
নাগরিকদের প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও বদলালো না চীনের নতুন নিরাপত্তা নীতি। গ্রাহকদের বলা হয়েছে, নতুন ফোন নিতে হলে ফেস স্ক্যান বাধ্যতামূলক। গত সেপ্টেম্বরে চীনা সরকার নতুন আইনের কথা ঘোষণার পরেই দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। চীনের এক আইনের অধ্যাপক নতুন আইনের বিরুদ্ধে আদালতেও গিয়েছিলেন। ওই অধ্যাপকের বক্তব্য, এত দিন নতুন ফোন নেওয়ার জন্য আঙুলের ছাপ (বায়োমেট্রিক পদ্ধতি) দিতে হতো। এবার ফেস স্ক্যান করলে কোনো তথ্য গোপন থাকবে না, এমন আশঙ্কা ওই অধ্যাপকের। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে এ খবর জানিয়েছে।
তবে কেবল চীনে নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বায়োমেট্রিক্স কিংবা ফেস স্ক্যানের তথ্য পাচারের অভিযোগ এর আগেও উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকেও তথ্য বিক্রি হয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে একাধিকবার। এ কারণে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করতে চান না। অবশ্য চীনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য গোপন করা যায় না। চীন সরকারের দাবি, ইন্টারনেটে অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্যই এমন নিয়ম কার্যকর করা হয়েছিল। মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রেও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কমানোর লক্ষ্যে ফেস স্ক্যানের নতুন নিয়ম চালু করা হয়েছে বলে দাবি চীনা প্রশাসনের। নতুন আইনের বলে ফোন ব্যবহারকারীদের যাবতীয় তথ্য সরকারের কাছে থাকবে। কোথাও কোনো অপরাধ হলে দ্রুত সে তথ্য দেখে অপরাধীকে শনাক্ত করা যাবে বলে দাবি চীনা কর্তৃপক্ষের।
তবে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে, এই নতুন নিয়ম চালু করার পেছনে চীনের অন্য উদ্দেশ্য রয়েছে। ফোনে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নাগরিকরা ‘দেশবিরোধী’ কার্যকলাপ চালাচ্ছেন কি না, সেদিকে নজর রাখাই সরকারের মূল উদ্দেশ্য। বিশেষ করে হংকংয়ে বৃহত্তর গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলন জোরদার হওয়ায় এ ধরনের নজরদারি আরো বাড়ানো হচ্ছে বলেই বিশেষজ্ঞদের অভিমত। এ কারণেই ফেস স্ক্যানের জন্য চীনজুড়ে কয়েক লাখ নতুন ক্যামেরা বসানো হচ্ছে বলেও জানা গেছে।