জনতা কারফিউতে ঘরবন্দি গোটা ভারত, আরো দুজনের মৃত্যু
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আহ্বানে আজ রোববার প্রায় সারা ভারত স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি হয়ে জনতা কারফিউ বাস্তবায়ন করে চলেছে। সকাল ৭টা থেকে শুরু হওয়া সাধারণ মানুষের নিজেদের ওপর নিজেরা আরোপিত জনতা কারফিউর সময় শেষ হবে আজ রাত ৯টায়।
গত বৃহস্পতিবার করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জনতা কারফিউর ঘোষণা করেছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আজ রোববার পর্যন্ত ভারতে এই ভাইরাসে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪১ জন।
টুইটে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘এই কারফিউ কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়তে অনেকটা সাহায্য করবে সবাইকে। এখন নেওয়া এই পদক্ষেপের ফল মিলবে পরে। সবাই বাড়িতে থাকুন, সুস্থ থাকুন।’
ভারতের কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং টুইটে লেখেন, তিনি রোববার বাড়ি বসেই কাজ করছেন। ভারতের বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা দেশবাসীকে অনুরোধ করেন, জনতা কারফিউকে সম্মান জানিয়ে বাড়িতে থাকতে।
এদিন সকালে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে দেখা যায়, অপ্রয়োজনে রাস্তায় বের হওয়া মানুষকে লাল গোলাপ দিচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। ভারতজুড়ে প্রায় সব ট্রেন ও সরকারি বা বেসরকারি বাসের চাকা বন্ধ। ট্যাক্সিও চলছে হাতেগোনা মাত্র। দোকানপাটের ঝাঁপ নামানো। এর ফলে বিমানবন্দর বা স্টেশনে নামা যাত্রীরা নিজেদের গন্তব্যে ফিরতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। ভারতের মাটিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এই জনতা কারফিউর মাধ্যমে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনে আরো বড় মাপের লকডাউনের পথে হাঁটতে পারে সরকার। সামাজিক দূরত্ব তৈরি করতেই মানুষের স্বার্থে এই জনতা কারফিউ ডাকা হয়েছে। স্টেজ-২ থেকে করোনা সংক্রমণ যাতে স্টেজ-৩-এ না পৌঁছাতে পারে, সে লক্ষ্যেই এই জনতা কারফিউ।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এরই মধ্যে সারা ভারতে করোনাভাইরাসে মারা গেছেন ছয়জন। ভারতে সবচেয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রাজ্য মহারাষ্ট্র। মহারাষ্ট্রে ৬৪ জন আক্রান্তের মধ্যে মৃত একজন। এই রাজ্যে আক্রান্তদের মধ্যে বিদেশি রয়েছেন তিনজন। সেখানে এখনো কেউ সুস্থ হননি। এরপরেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কেরালা রাজ্য। সেখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫২ জন। যার মধ্যে সাতজন বিদেশি। সেখানে সুস্থ হয়েছেন তিনজন।
আজ রোববার বিহারে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়। কিডনি বিকল হয়ে মারা যান ৩৮ বছর বয়সী করোনা রোগী।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ১৮৫ জনে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ ১০ হাজার ৭৮৪ জনে পৌঁছেছে। এ ছাড়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯৫ হাজার ১৪৫ জন। নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বার্তা সংস্থা বিএনও নিউজ এ খবর জানিয়েছে।
এদিকে, বিশ্বের ১৮৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। নানা ধরনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পর চীন পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেও ইতালি, ইরান, স্পেন, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্রসহ আরো অনেক দেশের অবস্থা নিয়ন্ত্রণহীন।