চীনে করোনাভাইরাসের ভুয়া চিকিৎসা ভাইরাল
চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানির সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অন্তত দুই হাজার।
এদিকে চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে করোনাভাইরাসের ভুয়া চিকিৎসা পদ্ধতি ভাইরাল হয়েছে। উইবু, টুইটার ও ফেসবুকের পোস্টগুলোতে বলা হচ্ছে, ‘চীনের একদল বিশেষজ্ঞ বলেছেন, লবণপানি মুখে নিয়ে কুলি করলে এই নতুন ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচা যাবে।’
বার্তা সংস্থা এএফপি ফ্যাক্টচেক করে জানিয়েছে, পদ্ধতিটি সঠিক নয়। কোনো বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি এমনটি বলেননি। এতে বলা হয়, স্যালাইন পানি নতুন ভাইরাস প্রতিরোধে সক্ষম নয়। কেউ যেন এটি শেয়ার না করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এএফপিকে জানায়, স্যালাইন পানি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কাজ করে না।
এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ফলে চীনাদের মধ্যে ব্যাপক মাত্রায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তারা বলছেন, ‘তিয়েনআনমেন স্কয়ার এবং ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে শুরু করে সব জায়গাই ফাঁকা। লোকজন নেই বললেই চলে। অনেক পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। তবে বিশ্বাস আছে, সরকার এই অবস্থার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবে।’
প্রাণঘাতী এই করোনাভাইরাস কীভাবে বা কোথা থেকে এসেছে, এ নিয়ে ভাবনার অবকাশ নেই। এখন শুধু প্রতিরোধের সময়। এর পদক্ষেপ হিসেবে চীন কর্তৃপক্ষ তালা দিয়েছে ১৩টি শহরে। বন্ধ রয়েছে স্বাভাবিক চলাচল। গণপরিবহন বন্ধ হয়েছে আরো দুদিন আগে। কিন্তু এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না প্রাণঘাতী ভাইরাসটি।
এরই মধ্যে চীনের উহান শহরে আজ রোববার থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে আগামী ছয় দিনের মধ্যে প্রস্তুত হবে এক হাজার শয্যার নতুন একটি হাসপাতাল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এ অবস্থায় প্রশাসনকে সতর্ক করতে নববর্ষের ছুটির দিনও জরুরি বৈঠক করেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
তবে এত শঙ্কার মধ্যেও আক্রান্ত রোগীর সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার খবরও রয়েছে, যার কৃতিত্ব রোগীরা হাসপাতাল-সংশ্লিষ্ট সবাইকে দিতে চান।
এশিয়ার কয়েকটি দেশ ছাড়াও এ ভাইরাস ছড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়ায়। সেসব জায়গায় চিকিৎসকদের সতর্ক অবস্থানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে হংকংয়ে সর্বোচ্চ মাত্রার জরুরি অবস্থা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটিও।