গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন কোভিড-১৯ রোগী নেই, বলছে চীন
সবার আগে করোনার সংক্রমণ কমাতে সক্ষম হয়েছিল চীন। তারপরও দেশটিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই অল্প হলেও বাড়ছিল। কিন্তু চীন আজ শনিবার জানিয়েছে, দেশটিতে নাকি গতকাল শুক্রবার নতুন কোনো আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
করোনার সংক্রমণ ছড়ানোর পর এই প্রথম চীনে একদিনে নতুন করে করোনায় আক্রান্তবিহীন একটি দিন দেখা গেল। এর আগে গতকাল শুক্রবার করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যুদ্ধে ‘বড় সাফল্য’ আসার উদযাপন করেন চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা। বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বের চীনে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছিল। এরপর গত জানুয়ারি থেকে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা হিসাব করা শুরু করে চীন। এরপর দেশটি থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে করোনাজনিত কোভিড-১৯ রোগের সংক্রমণ। চীনের করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকে ব্যাপক হারে।
গত ডিসেম্বেরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে করোনা সংক্রমণের হদিশ পাওয়া যায়। তারপর থেকে গোটা চীনেই তা ছড়িয়ে পড়ে। উহানে এ সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য চীনের কাঁচা মাংসের বাজারকে দায়ী করা হয়েছিল। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্বীকার করেছিল, করোনার সংক্রমণ ছড়ানোর পেছনে উহানের বাজারের ভূমিকা রয়েছে।
তবে চীনে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রথমে বাড়লেও ধীরে ধীরে যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, স্পেন, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, ব্রাজিল ও ভারতের মতো দেশ এ সংখ্যাকে অতিক্রম করেছে। করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা চীনে সাড়ে চার হাজারের কাছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে, আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যার সঠিক হিসেব চীন দিচ্ছে না। যা জানানো হয়েছে, তার চেয়ে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি। করোনার সংক্রমণ ছড়ানোর জন্যও চীনকে বারবার কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
অন্যদিকে চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিশ্বের অন্যান্য দেশকে সব রকমের সাহায্য করছে চীন। করোনাভাইরাস-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সবাইকে জানিয়েছে তারা। কীভাবে এ সংক্রমণ মোকাবিলা করা যেতে পারে, সে ব্যাপারেও সাহায্য করেছে তারা। কিন্তু চীনের এ দাবি একবারের জন্যও মানেনি যুক্তরাষ্ট্র। এখনো দুই দেশের মধ্যে এ নিয়ে টানাপোড়েন জারি রয়েছে।
অবশ্য চীন থেকে করোনার সংক্রমণ নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর এখনো মেলেনি। যেমন, প্রথম এ সংক্রমণের খবর দেওয়া সাংবাদিক কিংবা এ সংক্রমণের কারণ নিয়ে মুখ খোলা চিকিৎসক নিখোঁজ হয়ে গেছেন। চীনের অভ্যন্তরের ছবিটাও বিশ্বের কাছে অনেকটাই অজানা। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র যে বারবার দাবি করছে, উহানের এক গবেষণাগার থেকেই নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে, তা সমর্থন করেছে কিছু দেশ। তাই চীনের এ নতুন আক্রান্তের সন্ধান না মেলার দাবি বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলো কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা পায়, সেটাই দেখার।