গণহারে করোনা ভ্যাকসিন উৎপাদনে যেতে প্রস্তুত চীনা কোম্পানি
গবেষণাগারে দিনরাত এক করে খোঁজ চলছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন ও ভারত মিলিয়ে কমপক্ষে ৮০টি গবেষণাগারে স্বতন্ত্রভাবে চলছে অনুসন্ধান।
এরই মধ্যে চীনা কোম্পানি সিনোভ্যাক বায়োটেক করোনার ভ্যাকসিন তৈরির দাবি করেছে। এখন ছাড়পত্রের অপেক্ষায় তারা। ছাড়পত্র পেয়ে গেলেই গণহারে ভ্যাকসিনের উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে। চীন সরকারের বিশেষ ঋণ-সহায়তা ও জমি বরাদ্দ নিয়ে আগেই কাজ শুরু করেছিল কোম্পানিটি।
সিনোভ্যাকের দাবি, তাদের গবেষণাগারে প্রস্তুত ভ্যাকসিনই করোনা ঠেকাতে কার্যকর হবে।
এ মুহূর্তে বিশ্বে করোনায় মৃতের সংখ্যা দুই লাখ ৩৪ হাজার ৭৫ জন। তাই দেরি না করে গণহারে উৎপাদন শুরু করতে চায় চীনা এই প্রতিষ্ঠান। সিনোভ্যাকের দাবি, বানরের শরীরে অভূতপূর্ব সাড়া মিলেছে এই ভ্যাকসিনের। তবে গণহারে উৎপাদন শুরুর আগে তাদের আরো কয়েকটি ধাপ পার হতে হবে।
বড় পরিসরে ভ্যাকসিনটি উৎপাদন করতে তারা সক্ষম কি না, ছাড়পত্র পাওয়ার আগে সে প্রমাণও দিতে হবে কোম্পানিটিকে। এর আগে এই সিনোভ্যাকই সোয়াইন ফ্লুর ভ্যাকসিন গণহারে উৎপাদন করেছিল। তাই অনেকেরই আশা, চীনের এই সংস্থা করোনার ভ্যাকসিন উৎপাদনে সক্ষম হবে।
বিশ্বজুড়ে করোনা বিপর্যয়ে চারটি সংস্থার তৈরি ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন দিয়েছে চীন। তার একটি সিনোভ্যাক বায়োটেকের। বানরের পর মানব শরীরেও পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে।
সিনোভ্যাক জানাচ্ছে, করোনা প্রতিরোধে বছরে ১০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে প্রস্তুত তারা। একটি নিষ্ক্রিয় প্যাথোজেনের ওপর ভিত্তি করে এই ভ্যাকসিনের হাজারো শট সাদা-কমলা রঙের একটি প্যাকেজে সজ্জিত করা হয়েছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে করোনাভ্যাক। কোম্পানির দাবি, ভ্যাকসিনটি তৈরির কাজ প্রায় শেষ।
সিনোভ্যাক এপ্রিল মাসেই চীনের পূর্ব জিয়াংসু প্রদেশে ১৪৪ স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে ভ্যাকসিনটির পরীক্ষা চালিয়েছে বলে জানা গেছে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালগুলোর প্রথম দুটি পর্যায়ের পর জুনের শেষে ভ্যাকসিনটির আশাব্যঞ্জক ফল পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী কোম্পানিটি।
পরীক্ষার তৃতীয় ধাপ শেষ হলেই বোঝা যাবে ভাইরাসের বাহকের মধ্যে ভ্যাকসিনটি কার্যকর কি না। তবে সিনোভ্যাক তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার জন্য প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে। কারণ, চীনে ভাইরাসটির সংক্রমণ কমে যাওয়ায় ভ্যাকসিন পরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক তারা পাচ্ছে না।
সিনোভ্যাকের পরিচালক মেং উইং বলেন, ‘বর্তমানে আমরা ইউরোপ ও এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে কথা বলছি। তৃতীয় ধাপের জন্য কয়েক হাজার লোকের প্রয়োজন হবে। তবে ভ্যাকসিন পরীক্ষার জন্য কোনো দেশ থেকে এই পরিমাণ স্বেচ্ছাসেবী পাওয়া সহজ হবে না বলেই আমরা মনে করছি। এই ধাপে সাফল্য পেলে পর্যাপ্ত টিকা তৈরির অনুমোদন আদায়ে সময় লাগবে না।’