করোনা ত্রাসে সৃষ্টিকর্তার শরণাপন্ন ধর্মপ্রাণ মানুষ
ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে ওঠা করোনাভাইরাসজনিত কোভিড-নাইনটিন রোগে চীনে প্রাণহানির সংখ্যা এক হাজার পাঁচশ ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬ হাজার ৪৯২ জন। গত চব্বিশ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১৪৩ জনের। চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে ছুটি শেষে ফিরে আসা সবাইকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বর্তমান অবস্থাকে ‘ভয়াবহ’ আখ্যা দিয়েছে চীনের স্বাস্থ্য কমিশন।
পরিস্থিতির শিকার হয়ে দেয়ালে পিঠ ঠেকতে আর বেশি দেরি নেই। তাই সৃষ্টিকর্তার শরণাপন্ন হচ্ছে ধর্মপ্রাণ মানুষ। মালয়েশিয়ার পুত্রজায়ার একটি মসজিদে পর্যটকদের প্রবেশ নিষেধ করা হয়। পরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের নির্দেশে তা তুলে নেওয়া হয়। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে সবাইকে রক্ষা করতে বিশেষ মোনাজাত হয়েছে মালয়েশিয়ায়। সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর সুখ-শান্তি কামনা এবং বর্তমান বিশ্বের আতঙ্কের নাম মরণব্যাধি করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করেছেন মালয়েশিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশিরা। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় শেষে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের আমপাংয়ে ঢাকা রেস্টুরেন্টে ওই মিলাদ মাহফিল আয়োজিত হয়।
এদিকে গির্জায় যাওয়ার দিনও খুব একটা ভিড় হয়নি ফিলিপাইনের একটি সুপরিচিত ক্যাথলিক চার্চে। যাঁরা গিয়েছিলেন, তাঁরা সবাই প্রাণঘাতী ভাইরাস থেকে রক্ষার জন্য প্রার্থনা করেন। অন্যদিকে হংকংয়ে আগামী দুই সপ্তাহ গির্জায় জমায়েত স্থগিত করা হয়েছে। মাস্ক পরে এ ঘোষণা দেন হংকং ক্যাথলিক চার্চের কার্ডিনাল জন টং।
কার্ডিনাল বলেন, ‘মহামারি ঠেকাতে আগামী দুই সপ্তাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গির্জায় যাওয়াসহ যেকোনো ধরনের জমায়েত এই সময় বন্ধ রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’
করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনে সংক্রমণ রোধে নেওয়া পদক্ষেপ হিসেবে বন্ধ রাখা হয়েছে সব ধর্মের উপাসনালয়ের দুয়ার।
করোনা গোত্রীয় কোভিড-নাইনটিন যেন আরো শক্তিশালী হয়ে উঠছে। চীনের হুবেই প্রদেশে করোনার প্রাদুর্ভাব কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ভাইরাস প্রতিরোধক সরঞ্জাম সরবরাহ করে কূল পাচ্ছেন না। আজ শনিবার নতুন করে এই অবস্থাকে ভয়াবহ ঘোষণা করেছেন চীনের স্বাস্থ্য কমিশনের কর্তারা।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়া ২৪টি দেশের তালিকায় সবশেষ যুক্ত হয়েছে আফ্রিকা মহাদেশের মিসরের নাম। সেখানে করোনায় আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।
করোনার তোপে ধস নেমেছে এশিয়ার পর্যটন খাতে। যার মধ্যে অন্যতম হলো প্রমোদতরীর ভ্রমণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, বিশ্বের জন্য করোনাভাইরাসের হুমকি মারাত্মক হলেও চীনের হুবেই প্রদেশের বাইরে নাটকীয়ভাবে এর বিস্তার সেভাবে লক্ষ করা যাচ্ছে না। তবে বেশ কিছু প্রমোদতরীতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এদিকে উত্তর কোরিয়ায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় পাশে থাকতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে, করোনাভাইরাস নিয়ে চীন অস্বচ্ছ তথ্য দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ল্যারি কুডো।