করোনা ছড়ালে স্কুল, খেলাধুলা বন্ধ রাখবে অস্ট্রেলিয়া
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া প্রতিহত করতে বিদ্যালয় ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বন্ধ করে দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। প্রাণঘাতী ভাইরাসটির সম্ভাব্য মহামারি মোকাবিলায় অস্ট্রেলিয়া সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে আজ বুধবার জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী গ্রেগ হান্ট।
চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বন্যপ্রাণী থেকে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা করোনাভাইরাসে চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় তিন হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়া করোনাভাইরাস অনেকটা ফ্লুর মতো। চীনে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
রয়টার্সের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের প্রায় ৩০টি দেশ ও অঞ্চলে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের বাইরে অন্তত তিন ডজন মানুষ মারা গেছেন।
অস্ট্রেলিয়ায় এখন পর্যন্ত ২৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব নিশ্চিত হয়েছে। তবে দেশটি ভাইরাসের ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়া প্রতিহত করতে পেরেছে।
তবে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে। এমন অবস্থায় অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য ও অঞ্চলের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হান্ট।
ক্যানবেরায় হান্ট সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনো নির্দিষ্ট শহর কিংবা অঙ্গরাজ্যে যদি (করোনাভাইরাস) ছড়িয়ে পড়ে... স্কুল বন্ধ করে দিতে হতে পারে অথবা পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাসপাতালের কাঠামো বদলাতে হতে পারে।’
‘ভাইরাসটি যদি একাধিক শহর বা অঙ্গরাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে,’ যোগ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এদিকে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়া ‘অনিবার্য’ বলে মার্কিনিদের সতর্কবার্তা দিয়েছেন দেশটির শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ৫৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কংগ্রেসকে জরুরি ভিত্তিতে শতকোটি মার্কিন ডলার বরাদ্দ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
খেলাপাগল বলে পরিচিত অস্ট্রেলিয়াবাসী জাতীয় রাগবি লিগ ও অস্ট্রেলীয় ফুটবল লিগ শুরু হওয়ার অপেক্ষা করছে। এরই মধ্যে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রস্তুতির বার্তা দিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
হান্ট বলেন, কিছু ম্যাচ বাতিল করা হতে পারে। তবে কেবল ‘অনন্যোপায়’ হলেই তেমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন অসি স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
অস্ট্রেলিয়া গত ১ ফেব্রুয়ারি সরাসরি চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে কারো আগমন নিষিদ্ধ করেছে।
অস্ট্রেলিয়া সরকার গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসে অবস্থানরত ১৭০ নাগরিককে দেশে ফিরিয়ে আনে। জাপানের বন্দরে কোয়ারেন্টাইনে থাকা ওই প্রমোদতরীর আরোহীদের দেশে এনে ১৪ দিনের জন্য অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
অসি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ডায়মন্ড প্রিন্সেস থেকে নিয়ে আসা আরোহীদের মধ্যে অষ্টম ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।