করোনায় চীনে মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭২৪
চীনের উহান শহরে নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। বেইজিংয়ে মার্কিন দূতাবাস আজ শনিবার এ খবর জানিয়েছে। উহানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এই প্রথম কোনো বিদেশি নাগরিকের মৃত্যু হলো।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, আজ দুপুর পর্যন্ত সারা বিশ্বে এই মরণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭২৪ জনে। আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪ হাজার ৮৮৮ জন।
কীভাবে বিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস, আর প্রায় প্রতি মুহূর্তেই বাড়ছে করোনার শিকারের সংখ্যা, ডব্লিউএইচও তার লাইভ আপডেট দেওয়া শুরু করেছে।
বেইজিংয়ের মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে উহানে যে মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে তাঁর বয়স ৬০। আক্রান্ত সন্দেহে ওই ব্যক্তিকে গত বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) উহানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
প্রায় দুই দশক আগে চীনের মূল ভূখণ্ড ও হংকংয়ে সার্স ভাইরাসের মহামারীতে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে নতুন করোনাভাইরাসে প্রাণহানির সংখ্যা।
চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে গত বছরের ডিসেম্বরে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। হুবেই প্রদেশে কমপক্ষে ৮১ জনের প্রাণহানি হয়েছে। হুবেই প্রদেশের স্বাস্থ্য কমিশনের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
করোনায় সংক্রমণের শিকার হওয়াদের মধ্যে উহান শহরের বাসিন্দা সর্বোচ্চ সংখ্যক হলেও পার্শ্ববর্তী শিয়াও-গান শহরে দুই হাজারের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে।
চলমান পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল শুক্রবার টেলিফোনে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শি জিনপিং ট্রাম্পকে বলেন, চীনা সরকার ব্যাপকভিত্তিতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। করোনাভাইরাস যুদ্ধে ধীরে ধীরে সফলতাও পাচ্ছেন তাঁরা। তাই মহামারি মোকাবিলায় তাঁর সরকার আত্মবিশ্বাসী। দীর্ঘমেয়াদে চীনসহ বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়বে না বলেও আশ্বস্ত করেন শি জিনপিং।
এদিকে, জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় করোনাভাইসের সংক্রমণ নিয়ে গতকাল শুক্রবার একটি মানচিত্র প্রকাশ করে। তাতে চীন, হংকং, ম্যাকাও ছাড়াও ২৫টি দেশকে চিহ্নিত করা হয়। তারা বলছে, চীনের বাইরে হংকংয়ে একজন মারা গেছে, আক্রান্ত হয়েছে ২২ জন, ম্যাকাওতে আক্রান্ত ১০ জন। জাপানে আক্রান্ত ৮৬ জন, সিঙ্গাপুরে ৩০, থাইল্যান্ডে ২৫, দক্ষিণ কোরিয়ায় ২৪, অস্ট্রেলিয়ায় ১৪, জার্মানিতে ১৩, যুক্তরাষ্ট্র ১২, তাইওয়ানে ১৬, মালয়েশিয়ায় ১৪, ভিয়েতনামে ১২, ফ্রান্সে ছয়, আরব আমিরাতে পাঁচ, কানাডায় ছয়, ভারতে তিনজন; ফিলিপাইনে মারা গেছেন একজন, আক্রান্ত আরো দুজন; রাশিয়া ও ইতালিতে দুজন করে চারজন ও যুক্তরাজ্যে তিনজন। এ ছাড়া একজন করে রোগী পাওয়া গেছে বেলজিয়াম, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, সুইডেন, স্পেন, কম্বোডিয়া ও ফিনল্যান্ডে।
অন্যদিকে জাপানি প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৬১ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২১ জন জাপানি, আটজন মার্কিনি, পাঁচজন অস্ট্রেলিয়ার ও পাঁচজন কানাডার নাগরিক রয়েছেন।