করোনার ভ্যাকসিন তৈরিতে তামাকপাতা!
সিগারেট প্রস্তুতকারক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটি) গতকাল বুধবার জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির মার্কিন বায়োটেক ইউনিট করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ভ্যাকসিন তৈরির জন্য কাজ করছে। তামাকপাতার প্রোটিন ব্যবহার করে করোনার ভ্যাকসিন তৈরির জন্য কাজ বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স গতকাল বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
ভ্যাকসিনটি তৈরিতে কাজ করছে কেন্টাকি বায়ো প্রসেসিং (কেবিপি)। বিএটির মার্কিন ইউনিট রেনল্ডস আমেরিকানের একটি শাখা কেবিপি। তারা জানিয়েছে, যোগ্য উৎপাদক এবং সরকারি সংস্থাগুলোর সহায়তা পেলে আগামী জুন মাস থেকে তারা প্রতি সপ্তাহে ১০ থেকে ৩০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারবে।
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো জানিয়েছে, কেবিপি অলাভজনক ভিত্তিতে ভ্যাকসিনটি তৈরি করবে।
বিএটি জানিয়েছে, ভ্যাকসিনটি বর্তমানে প্রি-ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে। করোনাভাইরাসের জেনেটিক সিকোয়েন্সের একটি অংশের ক্লোন করে তা দিয়ে অ্যান্টিজেন তৈরি করা হবে। এরপর অ্যান্টিজেনটি তামাকগাছের মধ্যে সন্নিবেশিত করে ওই বিশেষ তামাকজাতীয় উদ্ভিদ পুনরুৎপাদন করা হবে।
অ্যান্টিজেন হলো এমনসব পদার্থ, যেগুলো সক্রিয় হলে দেহে রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। এ সময় অ্যান্টিবডিও সক্রিয় হয় এবং রোগ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে।
বিএটি জানিয়েছে, বিশেষ ধরনের ওই তামাকগাছ পুনরুৎপাদনের পর, সেগুলো থেকে অ্যান্টিজেন আলাদা করে শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়া শেষে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য প্রাণীর শরীরে প্রবেশ করানো হবে। বিএটি আরো জানিয়েছে, প্রচলিত ভ্যাকসিনের সঙ্গে তাদের ভ্যাকসিনের পার্থক্য হবে, বিএটির উৎপাদিত ভ্যাকসিনগুলো হিমায়িত করে ব্যবহারের প্রয়োজন হবে না। স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেই ভ্যাকসিনগুলো ব্যবহার করা যাবে।
বিএটির বৈজ্ঞানিক গবেষণা বিভাগের পরিচালক ডেভিড ও’রেইলি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, তামাকগাছ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা সাফল্য পেয়েছি। কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হতে বিভিন্ন দেশের সরকার এবং সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের সবাইকে সাহায্য করতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’
বিএটি জানিয়েছে, তারা এখন যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ভ্যাকসিন উৎপাদনের পরবর্তী প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করছে। এর পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিনটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গেও কথা বলেছে বিএটি।