করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ‘চূড়ান্ত পর্যায়ে’ : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ‘চূড়ান্ত পর্যায়ে’ পৌঁছেছে এবং মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস। এরই পরিপ্রেক্ষিতে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।
বিবিসির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইউএনবি আজ শুক্রবার জানিয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যখন করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে লড়াই করছে, সে সময়ই এসব কথা জানালেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান।
চীনের বাইরেও বিভিন্ন দেশে নতুন এই ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে ইরান ও ইতালি ভাইরাস সংক্রমণের বড় কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে এবং সেখান থেকে ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে আরো ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস।
টেড্রস বলেন, ‘করোনাভাইরাস এখন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে, এটি এখন সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয়।’
চীনে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৭৮৮ জনে। নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ৪৪ জনের। এ ছাড়া দেশটিতে একদিনে ৩২৭ জন সংক্রমিত হওয়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৮ হাজার ৮২৪ জনে। চীনা জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে পড়েছে বিশ্বের ৪৮টি দেশে। এ ছাড়া চীনসহ দেশগুলোতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮২ হাজার এবং মোট মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ৮০০ জনেরও বেশি।
অন্যদিকে, করোনাভাইরাসের ঝুঁকি মোকাবিলায় ওমরাহ ও পর্যটন ভিসা স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব।
চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ইরানে। দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা ২৬ জন। এশিয়ার বাইরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা ইতালিতে, সেখানে মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। এ ছাড়া জাপানে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে আটজন।
এরই মধ্যে চীনের পর দক্ষিণ কোরিয়ায় সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। দেশটিতে এরই মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। এ ছাড়া মোট আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজার ২২ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৫৬ জন। এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার দেগু শহর থেকে দেশটিতে করোনাভাইরাসের প্রথম সূত্রপাত বলে মনে করা হচ্ছে। শহরটিতে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৮২ জন।
যুক্তরাষ্ট্রেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকেই। তবে দেশটির স্বাস্থ্য ও মানবসেবাবিষয়ক মন্ত্রী অ্যালেক্স আজার জানিয়েছেন, সেখান করোনাভাইরাসের ঝুঁকি তেমন নেই। সে জন্য মার্কিনিদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। তবে যেকোনো সময় যেকোনো কিছুই হয়ে যেতে পারে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।