উইঘুর নারীদের জন্মনিয়ন্ত্রণে বাধ্য করছে চীন!
চীনের শিনজাং প্রদেশে নির্যাতনের শিকার উইঘুর মুসলিমদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি বন্ধ করতে নারীদের জন্মনিয়ন্ত্রণে বাধ্য করছে সরকার। উইঘুর নারীদের জোর করে স্টেরিলাইজ করা হচ্ছে বা গর্ভনিরোধক যন্ত্র স্থাপন করা হচ্ছে। নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
চীনা গবেষক এড্রিয়ান জেনজ এ গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন, খবর বিবিসি।
চীনের আঞ্চলিক সরকারি উপাত্ত, নীতিমালা বিষয়ক নথিপত্র এবং শিনজাংয়ের জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নারীদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর শিনজাং পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ তদন্তের আন্তর্জাতিক আহ্বান এসেছে।
প্রতিবেদনে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, উইঘুর ও অন্যান্য সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর নারীরা গর্ভপাত ঘটাতে রাজি না হলে তাঁদেরকে বন্দিশিবিরে আটকে রাখার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।এভাবে তাঁদেরকে শিশু জন্মদানের কোটা মেনে চলতে বাধ্য করা হচ্ছে।
এমনকী দুটি সন্তান নেওয়ার বৈধতা থাকার পরও কোনো নারী একের বেশি সন্তান নেওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকে স্টেরিলাইজেশন সার্জারি করানো হচ্ছে কিংবা গর্ভাশয়ে ইন্ট্রা-ইউটেরিন ডিভাইস (আইইউডি) স্থাপন করা হচ্ছে।
জেনজ তাঁর প্রতিবেদনে উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বলেছেন, শিনজাংয়ে সম্প্রতি কয়েক বছরে স্বাভাবিক জনসংখ্যা বৃদ্ধি নাটকীয়ভাবে কমেছে।
২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে উইঘুরদের সবচেয়ে বড় দুটি এলাকায় জনসংখ্যাবৃদ্ধির হার ৮৪ শতাংশ কমে গেছে। ২০১৯ সালে তা আরো কমেছে।
এ হারে জনসংখ্যা কমে যাওয়া ‘নজিরবিহীন’। এর মধ্য দিয়ে উইঘুরদের দমিয়ে রাখতে তাঁদের ওপর ব্যাপক নিয়ন্ত্রণ আরোপের রূঢ় বাস্তবতারই প্রকাশ ঘটেছে বলে উল্লেখ করেছেন জেনজ।
শিনজাংয়ে বন্দিশিবিরে আটকে রাখা হয়েছিল এমন কয়েকজন জানিয়েছেন, তাঁদের ঋতুস্রাব বন্ধের জন্য ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল।
সামগ্রিকভাবে শিনজাং কর্তৃপক্ষ তিন বা তার বেশি সন্তান থাকা নারীদের গণহারে স্টেরিলাইজ করানোর কর্মসূচি নিয়েছে বলে ধারণা প্রকাশ করা হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে।
চীন প্রতিবেদনের সব অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তবে উইঘুরদের বন্দিশিবিরে আটকে রাখার জন্য শিনজাং রাজ্য এরই মধ্যে ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়েছে।
চীনে উইঘুর এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু বিশেষত, মুসলিম জাতিগোষ্ঠীর প্রায় ১০ লাখ মানুষকে বন্দি করে রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
তবে উইঘুরদের জন্মনিয়ন্ত্রণে বাধ্য করার বিষয়টি অস্বীকার করে এড্রিয়ান জেনজের করা প্রতিবেদনটি ‘ভিত্তিহীন’ বলে উল্লেখ করেছে চীন সরকার।