আসল এন৯৫ মাস্ক কিভাবে চিনবেন?
মহামারি করোনাভাইরাসকে ঘিরে বাজারে নকল মাস্কের ছড়াছড়ি। যা সংক্রমণ রোখার বদলে ছড়ানোর আশঙ্কা বাড়িয়ে দিচ্ছে। আসল এন৯৫ মাস্ক চেনাটা সাধারণের জন্য বেশ মুশকিল।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস আনন্দবাজার পত্রিকাকে বলেন, ‘এন৯৫ মাস্ক, যেগুলোতে ভাল্ব রেসপিরেটর নেই, সেই মাস্কই সবথেকে ভালো। এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু বাজার এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীতে ছেয়ে গেছে। তবে বিশ্বস্ত দোকান থেকে এন৯৫ কিনলে ঠকে যাওয়ার আশঙ্কা কম।’
জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘মাস্ক দেখে আসল না নকল চিনতে পারলেও একটা উপায় অবশ্যই রয়েছে। সেটা হলো একটি সার্টিফিকেট। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথ (এনআইওএসএইচ) দ্বারা মাস্ক অনুমোদিত কি না তা পরখ করে দেখে নেওয়া। যারা এন৯৫ মাস্ক কিনছেন সে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট একটি নম্বর মাস্কের গায়ে উল্লেখ করা থাকে। সঙ্গে থাকে এনআইওএসএইচের কথাও। মাস্কের গায়ে লেবেলে বা প্যাকেজেও উল্লেখ থাকে। যারা প্রযুক্তির ব্যবহারে সক্ষম, তারা এই সংস্থার ওয়েবসাইটে গিয়ে সেটি মিলিয়ে দেখে নিতে পারেন।’
যদি ওয়েবসাইটে গিয়ে বুঝতে সমস্যা হয় সে ক্ষেত্রে মেইল করাও যেতে পারে মাস্কটি আসল কি না তা জানার জন্য। তবে চিকিৎসক অমিতাভ নন্দীর মত, ‘অনুমোদিত এন-৯৫ মাস্কের লোগোও নকল করা সম্ভব। তাই যাতে মানুষের কোনো রকম ক্ষতি না হয়, সেই ভিত্তিতে সরকারের ব্যবস্থা নিতে হবে। জাত-ধর্ম নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষ যাতে সমান পরিসেবা পায়, সঠিক মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে পারে তা দেখতে হবে সরকারকেই। তবেই সংক্রমণ সম্পূর্ণভাবে রোখা সম্ভব।’
কী কী দেখলে বোঝা যাবে যে মাস্কটি আসল এন৯৫ নয়
১. ফিল্টারিং রেসপিরেটরে কোনো মার্কিং না থাকলে
২. ফিল্টারিং মাস্কে কোনো টিসি নম্বর না থাকলে
৩. ক্যাপিটাল লেটারে এনআইওএসএইচ লেখা না থাকা বা ভুল বানানে লেখা
৪. সিকোয়েন্স বা কোনো নকশাদার কাপড় ব্যবহার হলে
৫. শিশুদের এই মাস্ক ব্যবহারে সম্মতির উল্লেখ থাকলে (এনআইওএসএইচ কখনোই শিশুদের ক্ষেত্রে এ জাতীয় মাস্কের কথা বলেনি)।
৬. ফিল্টারিং রেসপিরেটর মাস্কে হেডব্যান্ড থাকার কথা, ইয়ারলুপ নয়। কারণ হেডব্যান্ড থাকলেই তা মুখে চেপে বসবে। সংক্রমণের আশঙ্কা কমবে।
চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মী নন, তবে রোজ রাস্তায় বের হতে হচ্ছে, বাড়িতে এন৯৫ মাস্ক থাকলেও সেটি আসল কি না তা নিয়ে সংশয়ও রয়েছে, সে ক্ষেত্রে ত্রিস্তরীয় সার্জিক্যাল মাস্ক পরতেই পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। ভাল্ব রেসপিরেটরবিহীন এন৯৫ মাস্ক পরলে দেখে নিতে হবে তা অনুমোদিত কি না। তবে মাস্ক পরার সঙ্গে সামাজিক দূরত্বও মেনে চলতে হবে। বার বার হাত ধোয়ার বিষয় মাথায় রাখতে হবে।