আমাদেরকে উদ্ধারচেষ্টা বন্ধ করবেন না : চীনে খনিতে আটকেপড়াদের চিরকুট
চীনের একটি স্বর্ণের খনিতে বিস্ফোরণের পর খনির প্রবেশপথ থেকে প্রায় ৬০০ মিটার ভেতরে আটকে পড়া ১২ শ্রমিক জীবিত আছেন এবং তারা বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন। উদ্ধারকর্মীরা বলছেন, তাঁরা এসব শ্রমিকের হাতে লেখা চিরকুট পেয়েছেন যাতে লেখা রয়েছে, ‘আমাদের উদ্ধার করার প্রচেষ্টা বন্ধ করবেন না’। বিবিসি ও পার্স টুডের খবরে এ কথা জানানো হয়েছে।
১০ জানুয়ারি চীনের পূর্বাঞ্চলীয় শানদুং প্রদেশের ইয়ানতাই শহরের কাছে হুশান স্বর্ণের খনিতে বিস্ফোরণের পর মোট ২২ খনি শ্রমিক নিখোঁজ হন। যাঁদের কাছ থেকে বার্তা পাওয়া গেছে তাঁরা নিজেদের সংখ্যা ১২ জন বলে জানিয়েছেন। সেখানে আরো ১১ জন ছিলেন যাদের একজন আহত আর বাকি ১০ জনের কোনো হদিস মিলছে না।
চীনের সরকারি গণমাধ্যম জানিয়েছে, উদ্ধারকর্মীরা একটি সরু পাইপের সাহায্যে শ্রমিকদের এই দলটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁরা প্রথমে পাইপের ভেতরে রশি পাঠানোর পর অনুভব করেন ভেতর থেকে এটি ধরে টানা হচ্ছে। এরপর তারা একই পথে খাবার, ওষুধ, কাগজ ও পেন্সিল ভেতরে পাঠান। ওই কাগজে শ্রমিকরা তাদের অবস্থানের কথা লিখে জানিয়েছেন। তাঁরা আরো বেশি ওষুধ বিশেষ করে ব্যথা ও প্রদাহনাশক ওষুধ এবং ব্যান্ডেজ পাঠানোর আবেদন করেছেন। তাঁরা আরো বলেছেন, তাঁরা যেখানে অবস্থান করছেন সেখানকার পানির উচ্চতা অনেক বেশি।
চীনের গণমাধ্যম জানিয়েছে, উদ্ধারকর্মীরা এখন সুড়ঙ্গ খনন করে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। জনপদ থেকে দূরে অবস্থিত খনিটিতে বিস্ফোরণের খবর উদ্ধারকর্মীরা একদিন পর জানতে পারার কারণে শ্রমিকদের উদ্ধারের জন্য পুরো একদিনের মূল্যবান সময় নষ্ট হয়ে যায়।
চীনে খনি দুর্ঘটনা নতুন কিছু নয়। যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবের কারণে দেশটিতে বারবার খনি দুর্ঘটনা ঘটে। গত বছরের ডিসেম্বরে একটি কয়লার খনিতে কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে ২৩ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল। একই বছরের সেপ্টেম্বর আরেকটি খনিতে আগুন লেগে ১৬ শ্রমিক নিহত হন। এ ছাড়া, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর চীনের আরেকটি কয়লার খনিতে আগুন লেগে ১৬ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।