সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ফ্লিনকে ক্ষমা করলেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক লেফটন্যান্ট জেনারেল এবং দেশটির সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনকে ক্ষমা করে দিলেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ ডয়চে ভেলে এ খবর জানিয়েছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা এবং সে বিষয়ে এফবিআই এবং ট্রাম্প প্রশাসনকে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ ছিল মাইকেল ফ্লিনের বিরুদ্ধে। যে কারণে তাঁকে পদ থেকে সরিয়েও দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিদায়বেলায় ফ্লিনের সেই ‘দোষ’ ক্ষমা করে দিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এরপর ফ্লিনের বিরুদ্ধে আর কোনো অভিযোগ থাকবে না।
ক্ষমা ঘোষণা করার পর ফ্লিন এবং তাঁর পরিবারকে ট্রাম্প টুইট করে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ফ্লিনও টুইট করেছেন বাইবেলের একটি অনুচ্ছেদ উদ্ধৃত করে।
ফ্লিনের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পর্ক ছিল নাটকীয়। ডেমোক্র্যাটপন্থি হয়েও ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনের সময় প্রকাশ্যে ট্রাম্পকে সমর্থন করেছেন ফ্লিন। ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা এতটাই বেড়েছিল যে ভোটে জেতার পরদিনই ফ্লিনের নাম নিজের নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং আন্তর্জাতিক বিষয় ও সামরিক ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের প্রধান কাউন্সেলর হিসেবে ঘোষণা করেন ট্রাম্প। একাধিক অনুষ্ঠানে সেসময় ট্রাম্প ও ফ্লিনকে একসঙ্গে দেখা গেছে।
কিন্তু, সে সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ক্ষমতা পাওয়ার মাত্র ২৩ দিনের মাথায় ফ্লিনকে পদ থেকে সরিয়ে দেন ট্রাম্প। ফ্লিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি ওয়াশিংটনে রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে রাশিয়ার ওপর জারি করা মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কথা হয়েছে। ফ্লিন সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ট্রাম্প প্রশাসন সেসময় অভিযোগ করে, ফ্লিন ওই বৈঠকের বিষয়ে মার্কিন প্রশাসন ও এফবিআইর কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।
এরপর ২০১৭ সালে ফ্লিন দোষ স্বীকার করেন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেন। যদিও ২০২০ সালের শুরুর দিকে ফ্লিন ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন তুলে নেন। তাঁর সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন। শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প ক্ষমা করে ফ্লিনের ওপর থেকে সব অভিযোগ তুলে নিলেন।
মাইকেল ফ্লিনের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ রয়েছে। ২০১৬ সালে মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার ভূমিকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করছেন ডেমোক্র্যাটরা। ট্রাম্পের অভিশংসন মামলাতেও সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ডেমোক্র্যাটদের অভিযোগ, সে ঘটনাতেও ফ্লিনের ভূমিকা ছিল। যদিও এখন পর্যন্ত সে মামলায় ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে কোনো তথ্য প্রমাণ মেলেনি।
সাংবিধানিকভাবেই মার্কিন প্রেসিডেন্টদের ক্ষমা করার অধিকার আছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আট বছরে ২১২ জনকে ক্ষমা করেছিলেন। চার বছরে ট্রাম্প ক্ষমা করেছেন ২৮ জনকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে সবচেয়ে কম ক্ষমা করেছেন ট্রাম্প।