সম্মুখসারির কর্মীদের জন্য ৫০ কোটি ডলার বোনাস ঘোষণা অ্যামাজনের
করোনাকালে সম্মুখভাগের বা ফ্রন্টলাইন কর্মীদের পুরস্কৃত করতে যাচ্ছে বিশ্বের শীর্ষতম ই-কমার্স সংস্থা অ্যামাজন। এককালীন বোনাস হিসেবে তাঁদের জন্য ৫০ কোটি মার্কিন ডলার খরচ করার কথা ঘোষণা করেছে সংস্থাটি।
কোম্পানির পক্ষ থেকে একটি ব্লগ পোস্ট করে বলা হয়েছে, সংস্থার ফ্রন্টলাইন অপারেশন টিমগুলো কয়েক মাস ধরে অবিশ্বাস্য ভালো কাজ করায় ‘এককালীন বোনাস' দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অ্যামাজন কর্তৃপক্ষ। পরিকল্পনা অনুযায়ী মোট ৫০ কোটি ডলার দেওয়া হবে।
অ্যামাজনের অন্যতম সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেভ ক্লার্ক বলেন, “সংস্থার সম্মুখভাগের পরিচালনা কর্মীরা কয়েক মাস ধরে ভালো কাজ করেছেন। তাই এককালীন 'থ্যাংক ইউ বোনাস'-এর মাধ্যমে আমরা পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর জানিয়েছে।
সংস্থার সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে ডেভ ক্লার্ক জানান, পুরো জুন মাস অ্যামাজনের যে কর্মীরা কাজ করেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই এ বোনাস পাবেন। দেড়শ ডলার থেকে তিন হাজার ডলার পর্যন্ত বোনাস দেওয়া হবে। কাজের ধরন অনুযায়ী কর্মীরা আলাদা আলাদা বোনাস পাবেন। অ্যামাজনের ফুলটাইম কর্মী, কোম্পানি পরিচালিত খাদ্যপণ্য বিপণন কেন্দ্রের কর্মী এবং সহযোগী পরিষেবা কোম্পানির পণ্যবাহী গাড়িচালকেরা মাথাপিছু ৫০০ মার্কিন ডলার বোনাস পাবেন।
পার্টটাইম কর্মী ও চালকরা পাবেন ২৫০ ডলার। অ্যামাজন হোল ফুডসের নেতৃস্থানীয় সম্মুখভাগের কর্মীরা পাবেন ১০০ ডলার করে। একই পরিমাণের অর্থ ব্যবসা সহযোগী অংশীদারদের কর্মীদেরও দেবে অ্যামাজন। তবে ভোক্তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পণ্যের প্যাকেজ পৌঁছে দেওয়া স্থায়ী কর্মীরা পাচ্ছেন সবচেয়ে বেশি তিন হাজার ডলার। অ্যামাজন ফ্লেক্সের জন্য যাঁরা গত মাসে ১০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন, তাঁরা পাবেন ১৫০ ডলার।
শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই অ্যামাজনের চার লাখ কর্মী রয়েছেন, আছে ১১০টি ফুলফিলমেন্ট সেন্টার। করোনা মহামারির মাঝে বাণিজ্যিক পরিধি বেড়েছে এমন মুষ্টিমেয় কিছু কোম্পানির মধ্যে শীর্ষে আছে অ্যামাজন। তবে কর্মীদের স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিয়ে অ্যামাজনের উদাসীনতায় সম্প্রতি সমালোচনাও বেড়েছে। গত জুনের শুরুতে অবশ্য অ্যামাজন তার কর্মীদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে একটি এআই চালু করেছে।
কোভিড সংকটে আমাজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ কম নয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ঠিক কত কর্মী করোনাভাইরাস সংক্রমিত, তার সঠিক তথ্য প্রকাশ করেনি। আমাজনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, ‘এ তথ্য খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়।'
এর আগে গত মে মাসে ঘণ্টাপ্রতি মজুরি দুই ডলার বৃদ্ধি বাতিল করাসহ ওভারটাইমের জন্য দ্বিগুণ অর্থ দেওয়ার নিয়ম বাতিল করে অ্যামাজন। ওই পদক্ষেপে তীব্র সমালোচনার শিকার হয় অ্যামাজন। এর অন্যতম প্রধান কারণ বিপুলসংখ্যক কৃষ্ণাঙ্গ কর্মী অ্যামাজনের হয়ে সম্মুখসারির পণ্য সরবরাহের কাজ করেন। গুদামঘরসহ সরবরাহ ব্যবস্থার অন্যান্য অংশেও তাঁদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। সামাজিক নানা সুবিধাবঞ্চিত ওই কর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহামারির মধ্যে কাজ করছেন। তাই তাঁদের বাড়তি পাওনা না দেওয়াকে 'বঞ্চনা' বলে উল্লেখ করেছিল মার্কিন সংবাদমাধ্যম। সম্ভবত তাতেই বোধোদয় হয়েছে অ্যামাজনের।