ভারত মহাসাগরে রাশিয়া, চীন ও ইরানের ৪ দিনব্যাপী নৌ মহড়া শুরু
ভারত মহাসাগরের উত্তর অংশ ও ওমান সাগরে চার দিনব্যাপী যৌথ নৌ মহড়া শুরু করেছে রাশিয়া, চীন ও ইরান। সকালে ‘মেরিন সিকিউরিটি বেল্ট’ নামে এ মহড়া আজ শুক্রবার শুরু হয়েছে। আগামী সোমবার পর্যন্ত এ মহড়া চলবে।
তেহরানে এক সংবাদ সম্মেলনে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর জ্যেষ্ঠ মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুলফজল শেকারচি গত বুধবার জানিয়েছিলেন, মধ্যপ্রাচ্যের এই কৌশলগত অঞ্চল দিয়ে চলাচলকারী জাহাজগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ মহড়া অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইরানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম পার্স টুডে এ খবর জানিয়েছে।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর এই মুখপাত্র আসন্ন এ মহড়াকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আখ্যা দিয়ে বলেন, বিশ্ববাণিজ্যে ওমান সাগর ও ভারত মহাসাগর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং বিশ্বের বহু দেশের বাণিজ্যিক জাহাজ এই রুট দিয়ে চলাচল করে। কাজেই এখানকার নিরাপত্তা রক্ষা করার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।
রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে ইরানের সামরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়কে এ মহড়া আয়োজনের আরেকটি লক্ষ্য বলেও জানান জেনারেল শেকারচি। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও জলদস্যুদের দমন করা হবে এই মহড়ার অপর গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য।
এ ছাড়া অংশগ্রহণকারী তিন দেশের মধ্যে সমুদ্রবিষয়ক উদ্ধার তৎপরতার অভিজ্ঞতা বিনিময় করা হবে এ মহড়ার অন্যতম লক্ষ্য।
গতকাল বৃহস্পতিবার চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র উ কিয়ান জানান, ওমান সাগরের যৌথ নৌ মহড়ায় চীনের ক্ষেপণাস্ত্র-বিধ্বংসী অস্ত্র ‘শাইনিং’ অংশগ্রহণ করবে। এ ছাড়া মহড়ায় রাশিয়ার তিনটি রণতরী অংশ নিচ্ছে।
পারস্য উপসাগরে টহল দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যখন একটি আন্তর্জাতিক সামরিক জোট গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছে, তখন ইরান, রাশিয়া ও চীনের এ যৌথ নৌ মহড়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র গত কয়েক মাস ধরে জোট গঠনের জন্য ব্যাপকভাবে আহ্বান জানাচ্ছে।
এদিকে এরই মধ্যে জানা গেছে, মধ্যপ্রাচ্যে একটি যুদ্ধবিমান ও একাধিক টহল বিমান পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে জাপান। মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে নিজেদের নৌযানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাপান। দেশটির মন্ত্রিসভায় বিষয়টি অনুমোদন পেয়েছে বলে আজ শুক্রবার প্রকাশিত এক নথিতে জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাপানের বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু মিত্রের সঙ্গে যোগ না দিয়ে নিজস্ব নিরাপত্তা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে জাপান।
এ ছাড়া পারস্য উপসাগরে নিরাপদ নৌযান চলাচল নিশ্চিত করতে একটি ইউরোপীয় অভিযান আগামী মাসেই শুরু হবে। এ অভিযানে ফরাসি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন থাকবে।
সাম্প্রতিক সময়ে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিদ্বেষ, টানাপোড়েন ও সংকট। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে একটি আন্তর্জাতিক পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেন। পাশাপাশি ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত এখান থেকেই দুই দেশের মধ্যে নতুন করে সংকট সৃষ্টি হয়।