চীনে করোনাভাইরাস আতঙ্কে ভুতুড়ে পরিবেশ, ৮০ জনের মৃত্যু
চীনে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের আতঙ্ক আরো বেড়েছে। সেইসঙ্গে বাড়ছে প্রাণহানির সংখ্যাও। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আজ সোমবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া এক রাতেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত দুই হাজার ৮০০ জনে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
এরই মধ্যে চীনের চলমান এ পরিস্থিতিকে গুরুতর বলে অ্যাখ্যা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তিনি বলেন, ‘ভয়াবহ নতুন ভাইরাসটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। দেশ গুরুতর পরিস্থিতির মুখোমুখি।’
এদিকে গতকাল রোববার দুপুরে সাপ, বাদুর, কুমির, ময়ূরসহ বন্যপ্রাণী কেনাবেচার ওপর দেশজুড়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করে চীনা কর্তৃপক্ষ।
চীনা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাও জিয়াউই বলেন, ‘ক্লিনিক্যাল ডাটা নিয়ে আমরা গবেষণা করছি। এই ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা ধারণার চেয়েও বেশি। আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আশাবাদী।’
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত চীনের কয়েকটি শহরে যাতায়াতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। রাজধানী বেইজিং, শি-য়ান ও তিয়ানজিনের সঙ্গে ইন্টারসিটি বাস সার্ভিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ভাইরাসটির উৎসস্থল হুবেই প্রদেশের উহান শহরের গণপরিবহন, ট্রেন ও বিমান চলাচল কয়েক দিন আগে থেকে বন্ধ করার পর রোববার থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলও নিষিদ্ধ হয়েছে। বলা হচ্ছে, উহান শহরের পরিস্থিতি ভুতুড়ে। বাজারঘাট ও যান চলাচল সব বন্ধ রয়েছে। শুধু দু-একটি সুপারশপ খোলা রয়েছে। সেখানেও শুকনো খাবার ছাড়া আর কিছু পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে, নতুন রোগীদের সামাল দিতে চীনে জরুরি ভিত্তিতে দ্বিতীয় হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। এটি নির্মাণে ১৫ দিনের মতো সময় লাগতে পারে। এর আগে এক হাজার শয্যার হাসপাতালের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে, চীন ছাড়াও বিশ্বের অন্তত ১৪টি দেশে এই ভাইরাসে আক্রান্তদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এরই মধ্যে ভাইরাসটির সংক্রমণের আতঙ্কে হংকংয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ও সিডনিতে চারজন রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে ফ্রান্সে তিনজন, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রেও বেশ কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। যুক্তরাজ্য ও স্কটল্যান্ডে ৩১ জনকে সন্দেহমূলকভাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
এশিয়ার মধ্যে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, জাপান, তাইওয়ান, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ কোরিয়া ও নেপালে বেশ কিছু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ভারতের কেরালা ও মহারাষ্ট্রে ১৭৯ জনকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
এদিকে, চীনের উহানে আটকাপড়া এক হাজার মার্কিনিকে ফেরত নিতে একটি বিমান পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রায় ২০০ ব্রিটিশ নাগরিকও উহানে আটকা পড়েছেন।
কয়েকটি গণমাধ্যম বলছে, উহানে অবস্থান করা চার শতাধিক বাংলাদেশির মধ্যে কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি। তাঁদের সুরক্ষা দিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ২৪ ঘণ্টার হটলাইন চালু করেছে।