গাছকে বাঘিনীর ‘আলিঙ্গন’, ছবি তুলে ‘বর্ষসেরা’
পৃথিবীর অন্যতম বিরল কোনো প্রাণীর ছবি তোলা মুখের কথা নয়। এমন ছবি তুলতে গেলে অসাধারণ দক্ষতা তো বটেই, এর পাশাপাশি ভাগ্যের সহায়তাও আপনার খুব প্রয়োজন হবে। সাইবেরিয়ার বাসিন্দা সের্গেই গর্শকভ নিঃসন্দেহে তেমনই একজন দক্ষ ও সৌভাগ্যবান মানুষ। আর তাই এ বছরের ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার (ডব্লিউপিওয়াই) পুরস্কারটি উঠেছে তাঁর হাতে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, রাশিয়ার দূর পূর্বাঞ্চলীয় জঙ্গলে সাইবেরীয় একটি বাঘিনী বা আমুরের অনন্যসাধারণ ছবি তুলে ইন্টারনেট জগতে আলোচনার শীর্ষে এখন সের্গেই গর্শকভ।
যে ছবি তুলে সেরা চিত্রগ্রাহক
লেপার্ড ন্যাশনাল পার্কে তোলা ছবিটিতে দেখা যায়, একটি গাছকে আলিঙ্গন করে আছে একটি মাদি বাঘ।
ডব্লিউপিওয়াই প্রতিযোগিতার বিচারক প্যানেলের প্রধান রজ কিডম্যান-কক্স বলেন, ‘আলো, রং আর টেক্শ্চার—এ যেন কোনো তৈলচিত্র।’
লেপার্ড ন্যাশনাল পার্কে নিজের এলাকা চিহ্নিত করতে এভাবে গাছের গায়ে শরীর ঘষে গায়ের গন্ধ ছড়িয়ে দিচ্ছিল বাঘিনীটি।
রজ কিডম্যান-কক্স বলেন, ‘(ছবিটি দেখে মনে হচ্ছে যেন) বাঘিনীটি জঙ্গলেরই একটি অংশ। গাছের শেকড়ের সঙ্গে মিশে গেছে ওর লেজ। গাছ আর বাঘ মিলেমিশে এক হয়ে গেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, আগে থেকে বসিয়ে রাখা একটি ক্যামেরায় উঠেছে ছবিটি। এমনভাবে ক্যামেরা বসানো হয়েছে যেন কোনো বাঘ এলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবি তোলা হয়ে যায়। ছবিটি ক্যামেরার লেন্সে ধরা পড়ার ১০ মাস আগে ক্যামেরা সেট করে রেখেছিলেন সের্গেই গর্শকভ।
ছবির বাঘটির মতো রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলে বিচরণ করা বাঘেরা রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণীর তালিকায়। সব মিলিয়ে মাত্র কয়েকশ বাঘ হয়তো অবশিষ্ট আছে। এই বাঘের প্রধান খাবার হলো হরিণ ও বন্যশূকর। এই হরিণ ও বন্যশূকরও সংখ্যায় একেবারেই কমে গেছে। ফলে খাবারের খোঁজে আমুরদের এখন দূর-দূরান্ত পর্যন্ত যেতে হচ্ছে।
লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম বা জাদুঘরে এক অনলাইন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার বিজয়ীর নামটি ঘোষণা করা হয়। ছাপ্পান্ন বছর ধরে ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম ডব্লিউপিওয়াই প্রতিযোগিতা আয়োজন করে আসছে।