কাশ্মীরে গণভোট দিতে পাকিস্তান তৈরি, বললেন ইমরান খান
পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বাসিন্দারা কি পাকিস্তানের সঙ্গে থাকতে চান, নাকি স্বাধীনতা চান—সে ব্যাপারে তাঁদেরই সিদ্ধান্ত নিতে দেওয়া উচিত বলে মনে করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। একই প্রশ্নে কাশ্মীরে গণভোট দিতেও পাকিস্তান প্রস্তুত বলে জানান তিনি। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের প্রধান সম্পাদক ইনেস পোলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গত বুধবার এসব কথা বলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকার গত বছর আগস্টে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের মধ্য দিয়ে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে। এ প্রসঙ্গে ইমরান খান বলেন, ভারতে এখন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএসের ‘হিন্দুত্ববাদী’ ভাবাদর্শের জয়জয়কার। ইমরান খান আরো বলেন, আরএসএস জার্মানির নাৎসিদের থেকে অনুপ্রাণিত। আর নাৎসিদের জন্ম হয়েছিল সংখ্যালঘুদের প্রতি ঘৃণা থেকে। তেমনিভাবে আরএসএসের মতাদর্শের ভিত্তিও মুসলমানসহ অন্য সংখ্যালঘুদের প্রতি ঘৃণার ওপর দাঁড়িয়ে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত এখন আরএসএস পরিচালিত, যা দেশটি ও এর প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য ট্র্যাজেডি।
পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে মানবাধিকার পরিস্থিতি ভালো না থাকার অভিযোগ তোলা হলে ইমরান খান বিশ্বের যেকোনো নাগরিককে প্রথমে সেখানে যাওয়ার আহ্বান জানান। এরপর ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গিয়ে দুই অঞ্চলের তুলনা করে নিজেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দেন।
ইমরান খান বলেন, হংকংয়ের বিক্ষোভের চেয়ে কাশ্মীর ট্র্যাজেডি অনেক বড় ঘটনা হলেও বিশ্ব গণমাধ্যমে তা বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে না। এর কারণ হিসেবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য যে পশ্চিমাদের কাছে বাণিজ্যিক স্বার্থ বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ভারত একটি বড় বাজার। তাই কাশ্মীরের প্রায় ৮০ লাখ মানুষ এবং ভারতে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কী ঘটছে, তা নিয়ে পশ্চিমাদের বেশি মাথা ঘামাতে দেখা যায় না। ভারতে সম্প্রতি পাস হওয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সে দেশের সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে ২০ কোটি মুসলমানের পুরোপুরি বিপক্ষে হলেও শুধু বাণিজ্যিক কারণে বিশ্ববাসী চুপ রয়েছে।
ভারত ও কাশ্মীরের মানবাধিকার পরিস্থিতির কট্টর সমালোচক হলেও চীনে উইঘুর মুসলিমদের পরিস্থিতি নিয়ে ততটা সমালোচনা না করার কারণও জানতে চাওয়া হয়েছিল ইমরান খানের কাছে। তিনি বলেন, এর মূল কারণ দুটি। প্রথমত, ভারতে যা ঘটছে, এর সঙ্গে চীনে উইঘুরদের সঙ্গে যা করা হচ্ছে তার তুলনা করা যাবে না। দ্বিতীয়ত, চীন পাকিস্তানের খুবই ভালো বন্ধু। পাকিস্তানের সবচেয়ে কঠিন অর্থনৈতিক সংকটে চীন সহায়তা করেছে। ফলে এই বিষয়গুলো চীনের সঙ্গে গোপনে আলোচনা করা হয়, প্রকাশ্যে নয়। কারণ বিষয়গুলো স্পর্শকাতর।