করোনায় মার্চে ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু
চীন থেকে উৎপত্তি হলেও সারা বিশ্বে মহামারি আকার ধারণ করা করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) শুধু গত মার্চ মাসেই প্রায় ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, গত ১ মার্চ পর্যন্ত করোনায় বিশ্বব্যাপী মোট দুই হাজার ৯০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল এবং আক্রান্ত হয়েছিলেন ৮৬ হাজারের বেশি মানুষ। ঠিক এক মাস পর, আজ ১ এপ্রিল করোনায় বিশ্বব্যাপী প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ১৫১ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন আট লাখ ৫৮ হাজার ৬৬৯ জন। অর্থাৎ মাত্র এক মাসের ব্যবধানে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে ৩৯ হাজার ২৫১ জন এবং আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে সাত লাখ ৭০ হাজারের বেশি। বার্তা সংস্থা ইউএনবি এ খবর জানিয়েছে।
মাসখানেক আগে বিশ্বব্যাপী মোট মৃত্যুর, অর্থাৎ দুই হাজার ৯০০ জনের মধ্যে দুই হাজার ৮৭০ জনই ছিল ভাইরাসের উৎসভূমি চীনের। আক্রান্তের সিংহভাগও ছিল চীনে। তখন ভাইরাসটি ছড়িয়েছিল ৫৩টি দেশ ও অঞ্চলে। আর এখন ভাইরাসটি ছড়িয়েছে ২০২টি দেশ ও অঞ্চলে।
চীনে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর ভাইরাসটি বিপর্যস্ত করে তোলে ইউরোপের ইতালি ও স্পেনকে। ফলে ইউরোপ মহাদেশকে মহামারির কেন্দ্রভূমি আখ্যায়িত করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিইএইচও)। কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যায় সবাইকে ছাড়িয়ে এখন করোনার নতুন কেন্দ্রভূমি হয়ে উঠছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্র : গত ১ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ৬১ জন করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। এক মাস পর সেই যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৮৮ হাজার ৫৭৭ জন, যা বিশ্বে সর্বাধিক। অন্যদিকে, এক মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রে করোনাজনিত কোনো মৃত্যু ছিল না। কিন্তু আজ বুধবার সে যুক্তরাষ্ট্রে মৃতের সংখ্যা তিন হাজার ৮৯০ জন।
ইতালি : এক মাস আগে ইতালিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল এক হাজার ১২৮ জন এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ২৯ জন। আর এখন ইউরোপের দেশটিতে আক্রান্ত এক লাখ পাঁচ হাজার ৭৯২ এবং মৃতের সংখ্যা ১২ হাজার ৪২৮ জন, যা বিশ্বে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি।
স্পেন : ইউরোপে ইতালির পর করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশ স্পেন। সেখানে গত ১ মার্চ মোট আক্রান্ত ছিল ৪৬ জন এবং কোনো প্রাণহানির ঘটনা ছিল না। সেই স্পেনে এখন পর্যন্ত আট হাজার ৪৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আক্রান্ত হয়েছে ৯৫ হাজার ৯২৩ জন।
চীন : গত ১ মার্চ দেশটির মূল ভূখণ্ডে ৭৯ হাজার ৮২৪ জন আক্রান্তের মধ্যে দুই হাজার ৮৭০ জনের মৃত্যু হয়েছিল, যাদের বেশিরভাগই হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। ওই প্রদেশেই করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হয়েছিল বলে জানা যায়। এক মাস পর দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮১ হাজার ৫১৮ এবং মৃত্যুর সংখ্যা তিন হাজার ৩০৫ জন। ভাইরাসের উৎসভূমি চীন সংকট কাটিয়ে উঠলেও বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ : এক মাস আগে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস নিয়ে তেমন কোনো সচেতনতা ছিল না। আর বাংলাদেশের মানুষ আজ করোনায় কার্যত গৃহবন্দি। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।
বাংলাদেশে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ৫১ জন করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করেছে সরকার। যাদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে, ১৯ জন পুরোপুরি সুস্থ হয়েছেন এবং অন্যরা চিকিৎসাধীন।