করোনার নতুন কেন্দ্র হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র, একদিনেই আক্রান্ত ১৪ হাজার
চীন, ইতালি ও স্পেনের পর করোনা পরিস্থিতি নিয়ে এবার নতুন করে ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এ ছাড়া প্রতিদিনই মৃত্যু হচ্ছে অসংখ্য মানুষের। আর এসব কারণেই করোনায় তৈরি হওয়া বৈশ্বিক মহামারির পরবর্তী কেন্দ্র হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা এ খবর জানিয়েছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ হাজার ২৪ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮ হাজার ৩৪৭ জনে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ২৬৫ জনের। নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বার্তাস সংখ্যা বিএনও নিউজ এ তথ্য দিয়েছে। এমন অবস্থায় চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতির কথা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতেও দেখা গেছে অনেককে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের চিন্তা বাড়াচ্ছে নিউইয়র্ক শহর। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা অন্য সব অঙ্গরাজ্যের তুলনায় অন্তত পাঁচগুণ বেশি। নিউইয়র্কে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩১ হাজার। অন্যদিকে, নিউইয়র্কের পরই সবচেয়ে আক্রান্ত নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যে। সেখানে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষ।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের আবেদন জানিয়ে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো বলেছেন, ‘নিউইয়র্কে বুলেট ট্রেনের চেয়েও দ্রুতগতিতে ছুটছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ।’ নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের উদ্দেশে গত মঙ্গলবার এ কথা বলেন অ্যান্ড্রু কুয়োমো।
ডেমোক্র্যাট নেতা অ্যান্ড্রু আরো বলেন, ‘সংক্রমণ যে চূড়ায় গিয়ে পৌঁছেছে, সেটি আমাদের চিন্তারও বাইরে। ফেডারেল সরকার যথেষ্ট পরিমাণে জীবনরক্ষার সরঞ্জাম পাঠাচ্ছে না। আমাদের ফেডারেলের সহযোগিতা দরকার এবং তা এখনই দরকার।’
গভর্নর অ্যান্ড্রু আরো বলেন, ‘নিউইয়র্কে যা ঘটছে, তা ক্যালিফোর্নিয়া ও ইলিনয়েসেও ঘটবে, অল্প সময়ের ব্যাপার মাত্র।’
আক্রান্তের সংখ্যা কমে যাওয়ার কোনো লক্ষণ নেই বলেও জানিয়েছেন গভর্নর।
ফেডারেল জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থার পক্ষ থেকে নিউইয়র্কে ৪০০টি ভেন্টিলেটর পাঠানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করে অ্যান্ড্রু বলেন, ‘আপনারা ২৬ হাজার মানুষকে নিন, যাদের মৃত্যু হতে পারে। কারণ আপনারা মাত্র ৪০০টি ভেন্টিলেটর পাঠিয়েছেন।’
এরই মধ্যে করোনা মোকাবিলার প্রণোদনা বাজেট পাস করানো নিয়েও রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যকার বিরোধ বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য যথেষ্ট স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জাম তাদের হাতে নেই।
ট্রাম্প এবং দেশটির সিনেট ১ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের ত্রাণ তহবিল ছাড়ে একমত হওয়ার পর ঘুরে দাঁড়িয়েছে ওয়াল স্ট্রিটসহ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সব শেয়ারবাজার। অন্যদিকে, ট্রাম্পের আশা, ইস্টারের আগেই যুক্তরাষ্ট্র করোনাভাইরাস মুক্ত হবে।
এদিকে, করোনার বিস্তার রোধে ‘বাসায় থাকুন’, ‘হাত ধোন’এমন সব স্লোগান শোভা পাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সড়কগুলোতে।