ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে একদিন

Looks like you've blocked notifications!

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি কক্সবাজার জেলা। পাহাড়, পর্বত, ঝারনাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য দিয়ে ঘেরা এই জেলাটি। এই জেলার চকরিয়া উপজেলাতেই ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক (যা ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্ক নামেও পরিচিত) অবস্থিত। এটি ১৯৮০-৮১ সালে হরিণ প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে চালু হয়েছিল। বর্তমানে এটি জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য নানা জীবজন্তুর নির্ভয় আবাসস্থল।

যা দেখতে পাবেন :

কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পূর্বপাশে ডুলাহাজরা রিজার্ভ ফরেস্টে মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য সংবলিত বনাঞ্চলে সাফারি পার্কটি অবস্থিত।  এর আয়তন ৯০০ হেক্টর। এখানে খাঁচার ভেতরে জীবজন্তুর অবাধ চলাফেরা পর্যটকরা উপভোগ করতে পারেন। এই পার্কে তথ্য শিক্ষাকেন্দ্র, প্রাকৃতিক ঐতিহাসিক জাদুঘর এবং বিশ্রামাগার রয়েছে। কক্সবাজার জেলা সদর হতে উত্তরে পার্কটির দূরত্ব ৫০ কিলোমিটার এবং চকরিয়া সদর হতে দক্ষিণে ১০ কিলোমিটার। প্রাকৃতিক শোভামণ্ডিত নির্জন উঁচু-নিচু টিলা, প্রবহমান ছড়া, হ্রদ, বিচিত্র গর্জনের মতো সুউচ্চ ঐতিহ্যবাহী প্রাকৃতিক বৃক্ষ চির সবুজ বনের জানা-অজানা গাছ-গাছালি, ফল-ভেষজ উদ্ভিদ, লতার অপূর্ব উদ্ভিদের সমাহার ও ঘন আচ্ছাদনে গড়ে উঠেছে সাফারি পার্ক। ছায়াঘেরা পথ,সবুজ বনানী, জানা-অজানা গাছের সারি, পাখি আর বানরের কিচিরমিচির সব কিছু মিলিয়ে যেন এক অসাধারণ অনুভূতি। পথের ধারে উঁচু ওয়াচ টাওয়ার দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু বর্তমানে তা বন্ধ আছে সংস্কারকাজের জন্য। পার্কের চারদিকে বেষ্টনি রয়েছে যাতে বন্য প্রাণী পার্কের বাইরে যেতে না পারে । পার্কের ভিতরে অভ্যন্তরীণ বেষ্টনিও রয়েছে। অভ্যন্তরীণ বেষ্টনির ভেতরে বাঘ , সিংহ ও তৃণভোজী প্রাণী প্রাকৃতিক পরিবেশে বসবাস করে। শুধু তাই নয়, পুরো পার্কে দেখতে পাবেন বিভিন্ন প্রাণীর ভাস্কর্য যা আপনাকে মুগ্ধ করবে।

সাফারি পার্ক সম্পর্কে অতি অল্পসময়ে একপলকে এর বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে ধারণার জন্য রয়েছে ফটকের বাম পাশে ডিসপ্লে ম্যাপ। এখানে পার্কের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা আছে, আপনি চাইলে বাসে করে ঘুরে ঘুরে পুরো পার্কটি দেখতে পারবেন। তবে হেঁটে পুরো পার্কটি ঘুরে দেখাই উত্তম । পার্কে ঢুকেই হাতের বামে ও ডানে দুটি রাস্তা চলে গেছে। বাম পাশের রাস্তা ধরে হাঁটা শুরু করলে পুরো পার্কটি ঘুরে আপনি খুব সহজে  ডান পাশের রাস্তা দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারবেন।

প্রাণীবৈচিত্র্য

ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক মূলত হরিণ প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলে ও এখানে বাঘ, সিংহ, হাতি, ভালুক, গয়াল, কুমির, জলহস্তি, মায়াহরিণ, সম্বরহরিণ, চিত্রাহরিণ, প্যারা হরিণ প্রভৃতি প্রাণীও রয়েছে। এই পার্কে স্বাদু পানির কুমির যেমন আছে , তেমনি আছে লোনা পানির কুমির।

কীভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী সৌদিয়া, এস আলম, গ্রিনলাইন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, সোহাগ পরিবহন, মডার্ন লাইন প্রভৃতি বাসে সরাসরি ডুলা হাজারা সাফারি পার্কের সামনে নামতে পারবেন। শ্রেণিভেদে বাসগুলোর প্রতি সিটের ভাড়া জনপ্রতি ৯০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকার পর্যন্ত হয়ে থাকে। ঢাকা থেকে ট্রেনে ভ্রমণ করতে চাইলে কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেল স্টেশন হতে সোনার বাংলা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, তূর্ণা-নিশীথা, মহানগর প্রভাতী/গোধূলী, চট্রগ্রামমেইলে যাত্রা করতে পারেন। এরপর চট্টগ্রামের নতুন ব্রিজ এলাকা অথবা দামপাড়া বাস স্ট্যান্ড থেকে এস আলম, হানিফ, ইউনিক ইত্যাদি বিভিন্ন ধরন ও মানের বাসে ২৮০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা ভাড়ায় ডুলা হাজারা সাফারি পার্কে আসতে পারবেন। এ ছাড়া কক্সবাজার এসে সিএনজি, মাইক্রো কিংবা লোকাল বাসে চড়ে অনায়াসেই ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে যেতে পারবেন।