ছুটির দিনে

মাদার তেরেসা হাউসে একদিন

Looks like you've blocked notifications!
ছবি : সুমন্ত গুপ্ত

মিশনারিজ অব চ্যারিটি। যেখানে শায়িত আছেন মাদার তেরেসা। মাত্র পাঁচটি টাকা এবং ১০ জনকে নিয়ে শুরু এই মিশনারিজ অব চ্যারিটি। ধীরে ধীরে শহর থেকে রাজ্যে, দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে। তাঁর তৈরি মিশনারিজ অব চ্যারিটি ছড়িয়ে পড়েছে ১৩৯টি দেশে। সঙ্গে রয়েছেন সেই দুঃখী মানুষরা, যাঁদের জন্য এই ‘বিপুল’ কর্মকাণ্ড। সেই ‘বিপুলে’র টানে এই শহরে ছুটে এসেছেন মোহাম্মদ আলী, দোমিনিক লাপিয়ের, ইয়াসির আরাফাত, যুবরাজ চার্লস, ডায়নাসহ খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব। মাদার তেরেসার তিলে তিলে গড়ে তোলা মিশনারিজ অব চ্যারিটি দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে কলকাতা শহরে।

যা দেখবেন

মূল সড়কের হাতের বাঁয়ে তাকালে দেখা যাবে দেয়ালে মার্বেল পাথরে খোদাই করা লেখা MISSIONARIES OF CHARITY। বাঁ দিকে গলির ভেতর ঢুকতেই চোখে পড়বে মাদার তেরসার মূর্তি। বড় সাইনবোর্ডে লেখা The Mother House। পুরোনো দিনের ভবন আর সেই আগেকার দিনের জানালা। এখানেই শান্তির দূত শায়িত আছেন। সবাই বসে নীরবে প্রার্থনা করছে, কেউ বাঁ অঝোরে চোখের জল ফেলছেন। ধূপকাঠির মোহিত গন্ধ আর পরিবেশ যে কারোরই খুব ভালো লাগবে। মাদারের সমাধির পাশে বসে প্রার্থনা করার অনুভূতি বলে বোঝানো যাবে না। আপনিও বসে কিছু সময় প্রার্থনা করে নিতে পারেন। একপাশে দেখতে পাবেন ‘These flower were placed on Mother tomb. You are most welcome to take them as a blessing’, আপনিও আপনার প্রিয়জনদের মঙ্গল কামনায় মাদারের কাছে লিখে দিতে পারেন। একপাশে একটি কাপড়ের মধ্যে দেখতে পাবেন বিভিন্ন দেশের মানুষের অনুভূতিগুলো নানা ভাষায় লিপিবদ্ধ করেছেন। পাশের কক্ষে দেখা পাবেন বেশ বড় লাইব্রেরি কক্ষ। তবে এখানে ছবি তোলা নিষেধ। এই কক্ষে মাদার তেরেসার ব্যবহৃত সামগ্রীগুলো সুন্দর করে সাজানো আছে। সামনে এগিয়ে গেলে পাবেন দোতলার ছোট্ট একটি কক্ষ। তার মাঝে একটি খাটিয়ে পাশে একটি টেবিল আর চেয়ার। এই কক্ষেই থাকতেন মাদার তেরেসা।

বিশ্বে মানবসেবায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করা মানবাধিকারকর্মী মাদার তেরেসাকে সন্ত ঘোষণা করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। গত ৪ সেপ্টেম্বর ভ্যাটিকান সিটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে মাদার তেরেসাকে সন্ত ঘোষণা করেন পোপ। সন্ত হওয়ার প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করেছেন মাদার তেরেসা। ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌দুটি ঘটনাকে অলৌকিক বলে স্বীকৃতি দেয় ভ্যাটিকান এবং সর্বশেষে পোপ। সন্ত হওয়ার শর্ত হিসেবে প্রথম ঘটনা ঘটে ১৯৯৮ সালে। পশ্চিমবঙ্গের এক আদিবাসী মহিলা মণিকা বেসরার পেটের টিউমার সেরেছিল মাদার তেরেসার নামে প্রার্থনা করে। অন্যটি ঘটে ২০০৮ সালে। ভ্যাটিকানের দাবি, ওই বছর ব্রাজিলে মাদার তেরেসা নামে প্রার্থনা করে সুস্থ হন এক যুবক, যার মস্তিষ্কে একাধিক টিউমার ছিল। ৫ সেপ্টেম্বর মাদারের ১৯তম মৃত্যুদিন। তার ঠিক আগের দিন রোমে ‘বিয়েটিফিকেশন’ অনুষ্ঠানে মাদারকে ‘সন্ত’ ভূষিত করবেন পোপ ফ্রান্সিস।

কখন যাবেন

মাদার হাউসের দর্শন পেতে হলে আপনাকে যেতে হবে সকাল ৮টা হতে ১২টার ভেতর আর বিকেল বিকেল ৩টা থেকে ৬টার মধ্যে। বৃহস্পতিবার মাদার হাউস বন্ধ থাকে।

কীভাবে যাবেন

কলকাতা বিমানবন্দর/ রেলওয়ে স্টেশন/ সড়কপথে মাদার হাউসে যেতে আপনাকে ট্যাক্সি অথবা অটো ভাড়া করে এ জি সি বোস রোডে পৌঁছতে হবে। সেখানে যে কাউকে বললে দেখিয়ে দেবে মিশনারিজ অব চ্যারিটি অথবা মাদার হাউস।