চিকিৎসা খাতে তিনশ কোটি ডলার দিলেন জাকারবার্গ
ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ যে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি, সেটা সকলেরই জানা। কিন্তু নিজের ধনসম্পদ তিনি কাজে লাগাতে চান মানুষের সেবায়। এর আগেই তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, নিজের সম্পদের ৯৯ শতাংশই তিনি দান করে যাবেন।
সে অনুযায়ী কাজও শুরু করেছেন জাকারবার্গ। সঙ্গে আছেন তাঁর সহধর্মিণী প্রিসিলা চ্যান জাকারবার্গ। প্রিসিলা পেশায় একজন চিকিৎসক। মার্ক ও প্রিসিলা মিলে গড়ে তুলেছেন ‘চ্যান জাকারবার্গ ইনিশিয়েটিভ’।
গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকোতে এক অনুষ্ঠানে চিকিৎসা খাতে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন এই দম্পতি। এই অর্থ খরচ করা হবে বিশ্বজুড়ে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময়ে। এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
অনুষ্ঠানে প্রিসিলা জানান, মাতৃত্বকালীন তিনি যেসব জটিলতা ও অসুখের সম্মুখীন হয়েছেন, সেগুলো যেন অন্যদের পোহাতে না হয়, সে জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। শিশুদের নিরাপদ জীবনদানের লক্ষ্যে কাজ করবেন তাঁরা।
অনুষ্ঠানে প্রিসিলা আরো বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমরা মানুষের শরীর এবং রোগ সম্পর্কে অনেক কিছুই জানি। বিজ্ঞান ও চিকিৎসাশাস্ত্রও এখন অনেক আধুনিক, তাই আমাদের দুর্ভোগ কমে এসেছে। আমরা চিকিৎসাশাস্ত্রের সীমাবদ্ধতাগুলো জয় করতে চাই।’
বুধবারের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের মধ্যে অন্যতম মাইক্রোসফট করপোরেশনের চেয়ারম্যান বিল গেটস, সানফ্রান্সিসকোর মেয়র এড লি ও ক্যালিফোর্নিয়ার লেফটেন্যান্ট গভর্নর গ্যাভিন নিউজম।
মার্ক জাকারবার্গ বলেন, ‘গত ৫০ বছরে বিজ্ঞান ও চিকিৎসাশাস্ত্র অনেক উন্নতি করেছে। বসন্ত ও পোলিও রোগ প্রায় নির্মূল করা হয়েছে। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের সহায়তা ছাড়া এটি সম্ভব হতো না।’
জাকারবার্গ আরো বলেন, ‘বর্তমানে চার ধরনের রোগই সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর কারণ। সঠিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা এসব রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময় করতে পারি।’
জাকারবার্গের দেওয়া ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার দিয়ে চিকিৎসার পাশাপাশি চিকিৎসা গবেষণা খাতেও ব্যয় করা হবে। প্রতিষ্ঠা করা হবে ‘বায়োহাব’ নামে একটি বায়োসায়েন্স রিসার্চ সেন্টার। আগামী ১০ বছরে এই রিসার্চ সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণ ও গবেষণার জন্য খরচ করা হবে ৬০ কোটি মার্কিন ডলার।
এইচআইভি, এবোলা ও জিকা ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য এই সেন্টারে গবেষণা করবেন যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা। বায়োহাবের নেতৃত্বে রয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, সানফ্রান্সিসকোর অধ্যাপক জোসেফ দেরিসি ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্টিফেন কোয়াকে।