গ্রহাণুর আঘাত ঠেকাতে নাসার নতুন সংস্থা
পৃথিবীর দিকে ছুটে আসবে কোনো বিশাল গ্রহাণু, আর তার আঘাতে ধ্বংস হয়ে যাবে মানবসভ্যতা-এমন আশঙ্কায় ভোগা মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। আর এমন কোনো দুর্ঘটনার আশঙ্কা একেবারে উড়িয়েও দেওয়া যায় না, কেননা পৃথিবীতে ছোটখাটো গ্রহাণু বা উল্কাপাতের বিস্তর নজির রয়েছে।
এই ব্যাপারে আগেভাগে পূর্বাভাস পাওয়ার জন্যই মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা চালু করতে যাচ্ছে গ্রহাণুর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার জন্য বিশেষ এক কর্মসূচি। ইংল্যান্ডভিত্তিক প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ওয়্যার্ড’ জানিয়েছে এ খবর।
ওয়্যার্ডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পৃথিবীর জন্য আশঙ্কামূলক গ্রহাণু চিহ্নিত করার উদ্দেশ্যে নাসা ‘প্লানেটারি ডিফেন্স কো-অর্ডিনেশন অফিস’ (পিসিডিও) খুলেছে যার কাজ হলো এসব গ্রহাণুর ব্যাপারে আগাম সতর্কতা প্রচার করা ও সম্ভাব্য বিপদ মোকাবিলার জন্য অন্যান্য সরকারি সংস্থার সঙ্গে একযোগে কাজ চালানো।
পিসিডিওর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিন্ডসে জনসনের মতে, পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা গ্রহাণুগুলোকে চিহ্নিত ও ধ্বংস করার মতো কাজ সঠিকভাবে পরিচালনার জন্যই এই সংস্থার সৃষ্টি। গত বছরের ডিসেম্বরে পৃথিবীর খ্যাতনামা শতাধিক বিজ্ঞানীর এক সম্মিলিত আবেদনের কিছুদিন পরই এলো এই সংস্থা গঠনের ঘোষণা।
যদিও শুধু ২০১৪ সালেই নাসা এই খাতে বরাদ্দ পেয়েছে প্রায় চার কোটি মার্কিন ডলার। তারপরও সংস্থাটি পৃথিবীর জন্য বিপজ্জনক গ্রহাণুগুলোর মাত্র ১০ শতাংশকে শনাক্ত করতে পেরেছে।
পৃথিবীতে কিন্তু প্রায়ই ছোটখাটো গ্রহাণু আঘাত হানে, তবে সেগুলো বেশি শক্তিশালী নয়। এর ব্যতিক্রমও আছে- ১৯০৮ সালে রাশিয়ার টুঙ্গুশকা অঞ্চলে আট শতাধিক বর্গমাইল অঞ্চল বিধ্বস্ত হয়েছিল বিশাল এক গ্রহাণুর আঘাতে।
এ ছাড়া রাশিয়ার বায়ুমণ্ডলে ২০১৩ সালে বিস্ফোরিত হয় ‘চেলিয়াবিনস্ক’ নামের একটি গ্রহাণু, যার বিস্ফোরণের ক্ষমতা ছিল হিরোশিমার পরমাণু বোমাটির তুলনায় ২০ থেকে ৩০ গুণ শক্তিশালী।