সার্নে আবিষ্কার হলো নতুন কণা
ইউরোপের গবেষকরা নতুন একটি কণা আবিষ্কার করেছেন। এর ফলে পদার্থের একটি অবস্থা সম্পর্কে ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। পেন্টাকোয়ার্ক নামের নতুন কণা আবিষ্কার করেছেন সুইজারল্যান্ডের মাটির নিচে অবস্থিত ইউরোপীয় আনবিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সার্ন-এর গবেষকরা।
সম্প্রতি সার্নের অণু বিভাজনের যন্ত্র লার্জ হার্ডন কোলাইডরে (এলএইচসি) পেন্টাকোয়ার্কের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। অবশ্য পেন্টাকোয়ার্কের অস্তিত্বের কথা ঘোষণা করা হয় গত শতাব্দীর ৬০-এর দশকে। হিগস বোসন কণার সমসাময়িককালে পদার্থবিজ্ঞানী মারে গ্যেল ম্যান ও জর্জ জিউইগ-এর অস্তিত্বের কথা জানান। তাত্ত্বিকভাবে পেন্টাকোয়ার্কের কথা বলা হলেও এই প্রথম বাস্তবে এর অস্তিত্ব পাওয়া গেল।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, সার্নের গবেষকরা এলএইচসি চালানোর সময় পাওয়া সংকেতের মাধ্যমে পেন্টাকোয়ার্কের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হন। গতকাল মঙ্গলবার বিজ্ঞান সাময়িকী ‘ফিজিক্যাল রিভিউ লেটার্সে’ এ-সংক্রান্ত গবেষণা নিবন্ধটি পাঠানো হয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে এলএইচসি পুনরায় চালু করার পর সার্নের গবেষকদের এটিই সবচেয়ে বড় অর্জন। বিশাল আকৃতির যন্ত্রটির ক্ষমতা আগের চেয়ে বাড়ানো হয়েছে।
১৯৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পদার্থবিজ্ঞানী মারে গ্যেল ম্যান তত্ত্ব দেন, পরমাণুর মধ্যে থাকা মৌলিক কণা প্রোটন ও নিউট্রনের মাধ্যমে কোয়ার্ক নামের তিনটি নতুন ধরনের কণা তৈরি হয়। এর মাধ্যমেই তিনি পেন্টাকোয়ার্ক কণার ব্যাখ্যা দেন। ১৯৬৯ সালে নোবেল পুরস্কার পান মারে গ্যেল।
সার্নের গবেষকরা বলেন, এলএইচসির তিনটি কোয়ার্কে তৈরি লাম্বডা বারইয়ন নামক বল বিভাজন করতে গিয়ে পেন্টাকোয়ার্কের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এটি তৈরি হয় পাঁচটি কোয়ার্ক কণার সমন্বয়ে।
এলএইচসির মুখপাত্র গাই উইলকিনসন যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলকে বলেন, পেন্টাকোয়ার্ক শুধু একটি কণাই নয়। এর মাধ্যমে কোয়ার্ক কণা কীভাবে কাজ করে এর ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। তিনি আরো বলেন, অর্ধশতাব্দী পূর্বে গেল-ম্যান যে তত্ত্ব দিয়েছিলেন তা এতদিন বড় রহস্য ছিল। এতদিন পর এই রহস্যের কিনারা মিলল।
গাই উইলকিনসন বলেন, প্রকৃতিতেই হয়তো পেন্টাকোয়ার্ক তৈরি হয়। এটি সত্যি হলে নক্ষত্রের পরিবর্তন ও সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কেও ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। আর পেন্টাকেয়ার্কের অস্তিত্ব পাওয়ায় আরো কণার অস্তিত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলো বলে মনে করেন উইলকিনসন।