দাম পরিশোধ করবে ‘স্মার্ট রিং’!
স্মার্টফোনের নাম তো জানেন, সেটা দিয়ে এখন এমন কোনো কাজ নেই যা করা যায় না। এবার আপনার আঙুলে রাখার জন্য তৈরি হয়েছে ‘স্মার্ট রিং’, যা দিয়ে পণ্য কিনে দাম পরিশোধ করতে পারবেন আপনি। ম্যাশেবেলে প্রকাশিত খবরে জানা গেল, আংটির নাম রাখা হয়েছে ‘কার্ভ’, যা এরই মধ্যে ছাড়া হয়েছে যুক্তরাজ্যের বাজারে। এই আংটি পরে থাকলে পণ্য কেনার ক্ষেত্রে আপনাকে আর আলাদা করে কাগজ বা ধাতব মুদ্রা বহন করতে হবে না।
তবে এটাই প্রথম ক্রয়ক্ষমতাসম্পন্ন স্মার্ট ডিভাইস নয়। কয়েক বছর ধরে অ্যাপল ফোন ব্যবহারকারীরা ‘অ্যাপল পে’র মাধ্যমে এই সুবিধা ভোগ করে আসছেন। আংটির এই প্রযুক্তি যে ব্যবহারকারীদের নতুন অভিজ্ঞতা দেবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এর কারণ, এই আংটি স্মার্টফোনের সংযোগ ছাড়াই কাজ করবে। ফলে এর ব্যবহারকারীরা নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন (এনএফসি) বা নিকটবর্তী এলাকাভিত্তিক যোগাযোগে বাধাহীন প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা পাবেন।
অর্থ আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে কার্ভ কাজ করবে মাস্টারকার্ড নেটওয়ার্কের অধীনে। ব্যবহারকারীদের অবশ্যই কার্ভ ভার্চুয়াল মাস্টারকার্ড অ্যাকাউন্টে নিবন্ধিত হতে হবে। একবার এই আংটির সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে গেলে এটি বিশ্বের যেকোনো জায়গায়, যেখানেই যোগাযোগবিহীন অর্থ আদান-প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে কাজ করবে।
কার্ভের নির্মাতারা দাবি করছেন, এই ‘অলংকার’টি বিশ্বের প্রথম ক্রয়ক্ষমতাসম্পন্ন ‘স্মার্ট আংটি’। কিন্তু এটিও প্রতিযোগিতার মুখে পড়ছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আরেকটি ‘স্মার্ট আংটি’ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনএফসি রিংয়ের। যারা নিজেরাও অর্থ আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে এনএফসি প্রযুক্তির ব্যবহার করে। এনএফসি রিংস প্রতিষ্ঠানটির দাবি, কার্ভ তাদের তৈরি মেধা, নিজেদের আংটির নকশায় ব্যবহার করেছে। তবে এ দাবি নাকচ করে দিয়েছে কার্ভ।
এনএফসি রিংসের পেছনে যে দলটি কাজ করেছে, তারা আগেও এ ধরনের প্রযুক্তি প্রকাশ করেছিল, যখন তাদের সঙ্গে অর্থনৈতিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ভিসার অংশীদারত্ব ছিল। এই প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তি দুনিয়ায় আত্মপ্রকাশ করে ২০১৫ সালে। পরে তাদের তৈরি আংটিটি ২০১৬ সালের রিও অলিম্পিকে ব্যবহার করেন অলিম্পিক ভিলেজে থাকা সেরা ক্রীড়াবিদরা। ইউরোপের দেশগুলো থেকে এই এনএফসি আংটি কেনা যায়। পর্যায়ক্রমে বিশ্বের বিভিন্ন বাজারে ছাড়া হবে এই আংটি। তবে এর প্রযুক্তি কার্ভের থেকে আলাদা। এনএফসি আংটি কাজ করার জন্য একটি অ্যানড্রয়েড ডিভাইসের সঙ্গে সংযুক্ত হতে হয়, কার্ভে সেটির প্রয়োজন পড়ে না।
কার্ভের প্রতিষ্ঠাতা ফিলিপ ক্যাম্পবেল স্বীকার করেন, এ দুই আংটি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ই-মেইল চালাচালি হয়েছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এটি নিয়ে আইনি লড়াই চলছে, সেখানে কার্ভের উপস্থিতি নেই, আর এর সঙ্গে জড়ানোর পরিকল্পনাও নেই।
ক্যাম্পবেল আত্মবিশ্বাসী যে, এই বিতর্ক কার্ভের সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। তাই আপনি যদি ভবিষ্যতে এমন স্মার্ট অলংকার পরতে চান, তাহলে কার্ভের ওপর চোখ রাখতেই পারেন।