আইসিটি স্কিলস কম্পিটিশন : ৯ জন যাচ্ছে রিজিওনাল রাউন্ডে
দীর্ঘ দশ মাসে বিভিন্ন রাউন্ডে তীব্র প্রতিযোগিতা শেষে ‘বাংলাদেশ আইসিটি স্কিলস কম্পিটিশন ২০২১’-এর বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ (২ নভেম্বর) অনলাইনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
হুয়াওয়ে ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেন, যার মধ্য থেকে বুয়েট, চুয়েট, কুয়েট, আইইউটি এবং এনএসইউ থেকে মাত্র ১৫ জন শিক্ষার্থী চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নেন। তাঁদের মধ্যে দুজন শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতার প্রথম পর্বে ১০০০-এর মধ্যে ১০০০ স্কোর অর্জন করেছেন এবং ১০ জন শিক্ষার্থী দ্বিতীয় পর্বে এইচসিআইএ (হুয়াওয়ে সার্টিফায়েড আইসিটি অ্যাসোসিয়েট) সার্টিফিকেশনে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
চূড়ান্ত পর্বের পর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন সদস্যবিশিষ্ট তিনটি দলকে এ বছরের বাংলাদেশ আইসিটি স্কিলস কমপিটিশন’র বিজয়ী হিসেবে আজ ঘোষণা করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে ইউনেসকোর হেড অব অফিস ও ইউনেসকো প্রতিনিধি বিয়াট্রিস কালদুন ও হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ঝ্যাং ঝেংজুন।
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘এটি এমন একটি প্রতিযোগিতা, যা আমাদের তরুণদের সুপ্ত প্রতিভা প্রকাশে অনুপ্রাণিত করে। এ ক্ষেত্রে হুয়াওয়েসহ অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তরুণদের প্রয়োজনীয় দক্ষতার মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায়নে সরকারের লক্ষ্যের সাথে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। তীব্র প্রতিযোগিতামূলক এমন প্রতিযোগিতা আয়োজন করায় হুয়াওয়েকে সাধুবাদ জানাই। এর মাধ্যমে আমাদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়ার ভবিষ্যৎ অগ্রণীদের খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে।’
বিয়াট্রিস কালদুন বলেন, ‘আজকের তরুণই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। হুয়াওয়ে, বাংলাদেশ আইসিটি স্কিলস কম্পিটিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের উদীয়মান আইসিটি প্রতিভা তথাপি ভবিষ্যৎ আইসিটি লিডারদের জ্ঞানকে প্রসারিত করে এবং তাঁদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, যা তাঁদের কর্মজীবনের পাশাপাশি দায়িত্বশীল বিশ্ব নাগরিক হিসেবে পরিণত হতে ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশের তরুণদের এই মূল্যবান ও উপযোগী শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে দেওয়ার হুয়াওয়ের এ ধরনের প্রচেষ্টাকে ইউনেস্কো থেকে আমরা দৃঢ়ভাবে প্রশংসা করি।’
ঝ্যাং ঝেংজুন বলেন, ‘ডিজিটাল রূপান্তরে বাংলাদেশ দারুণ অগ্রগতি অর্জন করছে এবং এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে চেয়েছি। এ ক্ষেত্রে তরুণদের দক্ষ করে তুলতে হুয়াওয়ে বাংলাদেশ আইসিটি স্কিলস কমপিটিশনসহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যাতে বাংলাদেশ ভবিষ্যৎ নেতৃবৃন্দের শক্তির ওপর ভরসা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে।’
প্রতিযোগিতায় সোহান সালাহউদ্দিন মুগ্ধ, রাবীব ইবরাত ও মো. তাহমিদুর রাফিদের সমন্বয়ে গঠিত বুয়েট দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে; দ্বিতীয় হয়েছে মো. কাফ শাহরিয়ার, হাসান মেসবাউল আলী তাহের ও সুহানা বিনতে রশিদের সমন্বয়ে গঠিত চুয়েট দল এবং তৃতীয় হয়েছে আরিফ আহমেদ নওফেল, মো. তকিউল হাসান সাকিব ও মো. সেলিম রেজা জিমের সমন্বয়ে গঠিত এনএসইউ দল। পুরস্কার হিসেবে চ্যাম্পিয়ন, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দলের প্রত্যকে যথাক্রমে হুয়াওয়ে ল্যাপটপ, হুয়াওয়ে ওয়াচ এবং হুয়াওয়ে ট্যাব জিতেছে। সব বিজয়ী ২০২২ সালের মে মাসে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া হুয়াওয়ে আইসিটি স্কিলস কম্পিটিশনের রিজিওনাল রাউন্ডে অংশগ্রহণ করবেন। এ ছাড়া এই নয়জনের মধ্য থেকে কয়েকজন বিজয়ী হুয়াওয়ের সাথে কাজ করার সুযোগও পাবেন।
চুয়েটের শিক্ষার্থী ও বিজয়ীদের একজন সুহানা বিনতে রশিদ জানান, ‘বিজয়ী দলের সদস্য হতে পেরে আমি আনন্দিত। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা আমার জীবনে সবচেয়ে ভাল সিদ্ধান্তগুলোর একটি। এটি আমার দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রসারিত করেছে এবং সীমাবদ্ধতাকে পেছনে ফেলে আরও জানতে অনুপ্রাণিত করেছে। আমি এখন রিজিওনাল রাউন্ডে অংশগ্রহণ করার জন্য অপেক্ষায় আছি।’
বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিষয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত ‘বাংলাদেশ আইসিটি স্কিলস কম্পিটিশন’ মূলত দুটি অংশ নিয়ে গঠিত–‘ব্যবহারিক প্রতিযোগিতা’ এবং ‘তত্ত্বীয় প্রতিযোগিতা’। এই প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য হলো, আইসিটি খাতের প্রতিভাবানদের খুঁজে বের করা এবং তাদের আইসিটি বিষয়ক অ্যাডভান্সড শিক্ষা প্রদান করে আইসিটি খাতে অবদান রাখতে আরও অনুপ্রাণিত করা।