বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইসিটি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে সম্প্রতি দেশের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মোট ১০ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে আইসিটি ট্যালেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার-২০২০’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল গালা ইভেন্টে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

হুয়াওয়ের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট শেন মিংজের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটির সূচনা ঘটে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউনেস্কো বাংলাদেশের প্রধান বিয়াট্রিস কালদুন। বিজয়ীদের অনুপ্রেরণা দিতে হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ঝাং ঝেংজুন এবং হুয়াওয়ের অন্য কর্মকর্তারাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে হুয়াওয়ে বাংলাদেশ।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ে মোট ৫০০ শিক্ষার্থী এই ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে। সিজিপিএ, তাৎক্ষণিক পরীক্ষা এবং নতুন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠানের ওপর শিক্ষাথীদের দেওয়া প্রেজেন্টেশনের ওপর ভিত্তি করে শেষ পর্যন্ত ১০ জন বিজয়ী নির্বাচন করা হয়।

হুয়াওয়ে পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশে এই ইভেন্ট আয়োজন করে আসছে। সাধারণত নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা চীনে দুই সপ্তাহব্যাপী ট্রেনিংয়ে অংশ নিয়ে থাকে, তবে এ বছর কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতার কারণে প্রশিক্ষণ পর্বটি অনলাইনে সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পাঁচ দিনব্যাপী এই অনলাইন প্রোগ্রামে থাকছে ফাইভজি, ক্লাউড কম্পিউটিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই), ডিজিটাল ইকোনমি, ইন্ডাস্ট্রি ট্রেন্ড এবং হুয়াওয়ের এক্সপার্ট ও অতিথিদের সঙ্গে লাইভ-স্ট্রিমড সেশন। অন্যদিকে লিডারশিপ স্কিল প্রসঙ্গেও আলোকপাত করা হবে।

প্রধান অতিথি মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক চিত্রের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া ক্রমে জরুরি হয়ে উঠছে। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এবং বৈশ্বিক প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের সঙ্গে তাল মেলাতে আমাদের প্রয়োজন তরুণদের মধ্যে প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও দক্ষতার বিকাশ ঘটানো। আইসিটি ক্ষেত্রে দক্ষতা তাদের আরো শক্তিশালী করে তুলবে এবং তারা সমাজের উন্নয়নে আরো জোরালো ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে। আর এটা সত্যিই আনন্দের বিষয়, বিশ্বের শীর্ষস্থানে থাকা একটি আইসিটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের মেধাবীদের প্রযুক্তিগত বিকাশে সহায়তার দায়িত্ব গ্রহণ করছে।’

বিয়াট্রিস কালদুন বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারির বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আইসিটি প্রতিভা এবং উদ্ভাবনী আইসিটি সমাধানের প্রয়োজনীয়তা আগের চেয়ে এখন বেশি প্রয়োজন। সিডস ফর দ্য ফিউচার প্রোগ্রামের মাধ্যমে হুয়াওয়ে বাংলাদেশের তরুণদের আইসিটি বিষয়ে দক্ষতা এবং জ্ঞান অর্জন করতে সাহায্য করছে, যা তাদের কর্মজীবনে সফল হতে এবং বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সাহায্য করবে।’

শেন মিংজে বলেন, ‘বাংলাদেশের বিপুল প্রতিভাবান তরুণ আমাদের এক বিরাট সম্পদ। হুয়াওয়ে বিশ্বাস করে, তারুণ্যই উন্নয়নের, বিশেষত ডিজিটাল প্রযুক্তিভিত্তিক প্রসারের পথে মূল চালিকাশক্তি। তারুণ্যের শক্তি ও টিকে থাকার ক্ষমতাকে আমরা তাই স্বাগত জানাই। আর তাই আমরা তাদের মাঝে যথাযথ আত্মমূল্যায়ন ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ জাগ্রত করে তাদের সঠিক পথের সন্ধান দেওয়ার কাজটিকে নিজেদের দায়িত্ব মনে করি। এরই ধারাবাহিকতায় হুয়াওয়ে সিডস ফর দ্য ফিউচার শীর্ষক আইসিটি ট্যালেন্ট হান্ট প্রোগ্রামটির আয়োজন করে, যা দেশের তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য কর্মশক্তির অভাবকে ঘোচাতে সাহায্য করবে। এর মাধ্যমে আমরা তাদের ভেতরে একেকজন ভবিষ্যৎদ্রষ্টার উন্মেষ ঘটাতে চাই, যাতে করে ভবিষ্যতের বছরগুলোতে তারা সমাজে যোগাযোগ ও মেধার বিকাশে আরো উন্নততর আইডিয়ার জন্ম দিতে পারে।’

সিডস ফর দ্য ফিউচার-২০২০-এর বিজয়ীরা হলেন—আফসারা বেনজির এবং খন্দকার মুশফিকুর রহমান (বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, সিএসই বিভাগ), তাসনিয়া সুলতানা এবং আবদুল্লাহ আল মিরাজ (চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইইই বিভাগ), রাবেয়া তুস সাদিয়া এবং অমিত কর্মকার (রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিএসই বিভাগ), আদিবা তাবাসসুম চৌধুরী এবং আরিফুর রহমান (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইইই বিভাগ) এবং ফারিয়া রহমান ও ফয়েজ-উল ইসলাম (খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইইই বিভাগ)।